প্রতি ১০ নারীর ১ জন পিসিওএস রোগে ভুগছেন
মেডিভয়েস রিপোর্ট: দেশে প্রতি ১০ জন নারীর একজন পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস) রোগে ভুগছেন বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) রিপ্রোডাক্টিভ এন্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ইনফার্টিলিটি বিভাগ।
‘পিসিওএস’ প্রজননক্ষম মহিলাদের একটি অন্যতম প্রধান হরমোন ও বিপাকজনিত সমস্যা।
আজ মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিএসএমএমইউয়ে গর্ভধারণে জটিলতা বিষয়ক পলিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম পিসিওএস সচেতনতা মাস সেপ্টেম্বর পালন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপ্রোডাক্টিভ এন্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ইনফার্টিলিটি বিভাগের একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা পূর্বক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় এ কথা বলেন বক্তারা।
আলোচনা সভায় জানানো হয়, মাসিক শুরু হওয়ার পর কিশোর বয়স থেকেই পিসিওএস’র লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে শুরু করে। হরমোনজনিত এ রোগে আক্রান্ত নারীদের ওজন বৃদ্ধি পাওয়াসহ বিভিন্ন অংশে অপ্রয়োজনীয় চুল গজানো, প্রতিনিয়ত চুল পড়া বা চুলের ঘনত্ব হালকা হতে থাকা, ত্বক অতিরিক্ত তেলতেলে হওয়া বা ব্রণ হওয়া, শরীরের বিভিন্ন অংশের ত্বক কালো হয়ে যেতে থাকে, যেমন—হাত কিংবা স্তনের নিচের ত্বক, গলার পেছনের অংশে, কুঁচকিতে কালো দাগ ইত্যাদি, ঘুমে সমস্যা হওয়া, সারাক্ষণ দুর্বলতা অনুভব করা, মাথাব্যথা, অনিয়মিত পিরিয়ড (মাসিক) হওয়া, পিরিয়ডকালীন সময়ে অতিরিক্ত রক্ত যাওয়ার ফলে গর্ভধারণে সমস্যার সৃষ্টি হওয়া ইত্যাদি। এই রোগে নারীদের গর্ভধারণে জটিলতা, ডায়াবেটিস, মেটাবোলিক সিনড্রোম, যেমন—হৃদনালি সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত হওয়া, রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড, কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া, রক্তচাপ বাড়া, বিষণ্ণতা অনুভব করা, জরায়ু থেকে রক্তপাত হওয়া, তল পেটে তীব্র ব্যথা হওয়া ও যকৃতে প্রদাহ হতে পারে।
শোভাযাত্রা আরও জানানো হয়, পিসিওএস আক্রান্তদের শীরর চর্চা ও ওজন কমানো জরুরি। ওজন পাঁচ শতাংশ কমাতে পারলে পিরিয়ড নিয়মিত হতে শুরু হতে পারে। আর ওজন ১০ শতাংশ কমাতে পারলে ডিম্বাশয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে এবং বন্ধ্যত্বের সমস্যা দূর হবে। সুষম খাবারসহ প্রচুর পানি বা মিষ্টিহীন জলীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। নির্ধারিত সময়ই দৈনন্দিনের খাবার গ্রহণ করা জরুরি। একই সঙ্গে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ, উচ্চ রক্তচাপ কমানো, চর্বিতে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর মাধ্যমে পিসিওএস প্রতিরোধ করা সম্ভব।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসএমএমইউ ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দেশের রোগীরা যেসকল ব্যয়বহুল রোগের চিকিৎসার জন্য বিদেশে যায়, তার মধ্যে নারীদের বন্ধ্যত্ব অন্যতম। এর ফলে দেশের মুদ্রা বিদেশে চলে যায়। ইতিমধ্যেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপ্রোডাক্টিভ এন্ডোক্রাইনোলজি এন্ড ইনফার্টিলিটি বিভাগে পুরুষ ও নারীদের বন্ধ্যত্ব রোগের উন্নত চিকিৎসা সেবা শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বন্ধ্যত্ব রোগের বিশ্বমানের চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে। এর ফলে দেশের বন্ধ্যত্ব নারী পুরুষ মাতৃত্ব ও পিতৃত্বের অনুভূতি লাভ করতে পারবেন বলে আশা রাখি।’
