‘চিকিৎসার পরিবেশ ভালো বলেই বিএসএমএমইউতে রোগীর চাপ’

মেডিভয়েস রিপোর্ট: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসার মান ও পরিবেশ উন্নত হওয়ায় প্রতিদিন অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হয় বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ‘বিএসএমএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার পরিবেশ নেই’—শীর্ষক খবরের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে আজ মঙ্গলবার (৭ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি করা হয়।
এতে আরও বলা হয়েছে, বিগত ৫ জুন তারিখে কয়েকটি জাতীয় পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার পরিবেশ নেই’—মর্মে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, যা এই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অত্যন্ত দুঃখজনক।
বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা সেবা ও শিক্ষা সমগ্র জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে এতে আরও বলা হয়, এখানে প্রতিদিন বহির্বিভাগে প্রায় ১০ হাজার রোগী চিকিৎসা নেয়। এর মধ্যে প্রায় ২ হাজার রোগী ভর্তি হয়। প্রায় ৩ হাজার রোগী কম খরচে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে থাকে এবং প্রায় ১ হাজার রোগী অল্প খরচে অপারেশন করে থাকে।
অন্যান্য হাসপাতালের তুলনায় অনেক কম খরচে এখানে আধুনিক ও উন্নত চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রতিদিন দেশের সকল স্তরের জনগণ, সাধারণ দিনমজুর থেকে শুরু করে সমাজের উচ্চ স্তরের ব্যক্তিবর্গ যেমন সম্মানিত স্পিকার, মাননীয় বিচারপতি, বিজ্ঞ বিচারক, মন্ত্রী, এমপি, প্রশাসন, মিডিয়া, রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব এখানে চিকিৎসা গ্রহণ করে থাকেন। এখানে চিকিৎসার মান ও পরিবেশ উন্নত হওয়ায় প্রতিদিন স্বাভাবিক ধারণক্ষমতার বাইরে অতিরিক্ত রোগীদের চাপ সামলাতে হয়। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট সকলে আন্তরিকভাবে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা ও প্রশাসন বিগত কোভিড মহামারীর সময়ে সারা দেশের অসংখ্য রোগীর চিকিৎসা ও টিকা দেওয়ার সময়ে মাননীয় বিচারপতি ও বিজ্ঞ বিচারকগণের চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে তাঁদের ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা ও টিকা প্রদান করেন’, উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এতে আরও বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশে প্রথমবারের মতো ক্যাডাভারিক ট্র্যান্সপ্লান্ট ও লিভার ট্র্যান্সপ্লান্টের মতো জটিল অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়। ফলে এই হাসপাতাল সমগ্র দেশবাসীর আশা আকাঙ্ক্ষর প্রতীকে পরিণত হয়েছে। এই আস্থার ফলে দেশের বিপুল জনগোষ্ঠী এ ধরনের জটিল চিকিৎসার জন্য বিদেশে না গিয়ে দেশেই চিকিৎসার জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ করছে। তাই পত্রিকার এ ধরনের খবর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরে জনগণের আস্থায় চিড় ধরাবে, যা দেশের সামগ্রিক চিকিৎসা সেবার গতিশীলতার স্বার্থে বাঞ্চনীয় নয়। বর্তমান বাস্তবতায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা সেবা ও পরিবেশ সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে মন্তব্য কাম্য।
বিশ্ববিদ্যালয় ও জনগণের স্বাস্থ্যসেবায় বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে—এমন নেতিবাচক মন্তব্য ঢালাওভাবে প্রচারমাধ্যমে প্রচার না করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সবাইকে অনুরোধ করছে। একইসাথে সংক্ষুব্ধ বা বিক্ষুব্ধ সকল ব্যক্তিকে কোনো নেতিবাচক মন্তব্য করার পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে সুপরামর্শ ও নির্দেশনা প্রদান করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে।