স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বাড়ল ১ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা
মেডিভয়েস রিপোর্ট: ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছে সরকার। বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য সরকারের বরাদ্দ বেড়েছে ১ হাজার ১৮৯ কোটিটাকা। গত অর্থবছরে (২০২২-২০২৩) এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা। যা এবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ৫২ কোটি টাকায়।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, মানসম্মত ও জনবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা বর্তমান সরকারের নির্বাচনী অঙ্গিকার। এটি বিবেচনায় নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ খাতে আগামী ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য ৩৮ হাজার ৫২ কোটি টাকা প্রস্তাব করছি যা গত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা ছিল।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ‘উন্নয়নের দীর্ঘ অগ্রযাত্রা পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’ শীর্ষক বাজেটের আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা।
আজকের বাজেট ঘোষণার মধ্য দিয়ে দেশের ৫২তম বাজেট ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। আর ক্ষমতায় থেকে একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকারই টানা ১৫টি বাজেট ঘোষণা করছে।
এবারের বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। অন্যান্য উৎস হতে ৭০ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের প্রস্তা করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। যা জিডিপি’র ৫.২ শতাংশ। মোট ঘাটতির মধ্যে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ উৎস হতে এবং ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা বৈদাশিক উৎস হতে নির্বাহ করার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।
মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপির) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ আর মূল্যস্ফীতির বার্ষিক হারের লক্ষ্য থাকছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। আগামী বছরে মোট বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা হবে জিডিপির ৩৩ দশমিক ৮ শতাংশ।
বাজেটে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এটি চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা বেশি। বাজেটের এই ব্যয় মেটাতে মোট কর আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এই লক্ষ্যমাত্রা ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় ৬৭ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা বেশি।
নতুন বছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তাই সরকার যেভাবেই হোক আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির লাগাম ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যেই টেনে রাখতে চায়। নতুন অর্থবছরের জিডিপি হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। নতুন অর্থবছর মোট জিডিপির পরিমাণ ধরা হয়েছে ৫০ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা।
উচ্চ প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা নিয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়েছে জিডিপি। আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮ হাজার ৬৭১ কোটি টাকা বেশি বৈদেশিক ঋণ আগামী অর্থবছরে নেওয়া হবে। আর ঋণগ্রস্ত বেশি হওয়ায় অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের জন্য বেশি টাকা গুণতে হবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে। এছাড়া বাড়ছে সরকারের মূলধনি ব্যয়ও। আগামী অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৮৩ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা। এছাড়া অভ্যন্তরীণ খাত থেকে নেওয়া হচ্ছে ১ লাখ ১৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা।
/এএইচ/
