এক সপ্তাহের ওষুধ যেন সেবন না হয় সারা জীবন

ওষুধ খাওয়া নিয়ে চিন্তাধারার বৈচিত্রের শেষ নেই। কিছু মানুষ আছেন, যারা প্রয়োজনীয় ওষুধ সময়মতো খান বা খেতে চেষ্টা করেন।
বাকিরা দুই চরমপন্থী দলে বিভক্ত। একদল কিছুতেই ওষুধ খাবেন না! প্রেশার সাত আসমানের উপর উঠুক, কাশতে কাশতে ফুসফুস গলা দিয়ে বের হয়ে যাক, কিংবা ডায়বেটিস বেড়ে রক্ত চিনির শিরায় পরিণত হোক, তারা দাঁতে দাঁত চেপে পড়ে থাকেন। গলা ব্যথা হলে হালি হালি লবংগ চেবান, ডেংগুতে পেঁপে পাতার রস খান, প্রেশার বাড়লে গলা অবধি তেঁতুল গোলা খান, থানকুনি পাতা, পুদিনাপাতা, চিরতা, আমলকি, হরিতকি, কালিজিরা, সবকিছুই চেষ্টা করেন, শুধু ওষুধ দেখলেই একেবারে সর্বময় অনশন শুরু করে দেন!
কেউ তাদের ওষুধ দিলে এমনভাবে তাকান, যেন তাকে পটাশিয়াম সায়ানাইডের বড়ো ভাই খেতে দেয়া হয়েছে!
আরেক দলের আবার অন্য ভেজাল! তাদের মন খালি ওষুধ ওষুধ করে। যে কোনো ছুতা নাতাতেই ফট করে একটা ওষুধ গিলে ফেলার জন্য আঁকুপাঁকু করতে থাকেন! প্রস্রাবে একটু জ্বালা-পোড়া হলেই দুটো সিপ্রোফ্লক্সাসিন, গলায় খানিক ব্যথা হলেই তিনটি এজিথ্রোমাইসিন, কোমরটা ধরলে একটা ডাইক্লোফেনাক—এগুলো তো কোন ব্যাপারই নয়।
গ্যাসের বড়ি, মেট্রোনিডাজল আর প্যারাসিটামল ঝাঁকে ঝাঁকে খেয়ে বেড়ান তারা। এমনকি ঘাড়ে অস্বস্তি হলে একটা একটা প্রেশারের বড়ি কিংবা প্রস্রাব একটু বেশি বেশি হলে ডায়াবেটিসের ওষুধও খেতে তাদের কোনো দ্বিধা নেই!
কোনো ডাক্তার একবার যদি কোনো ওষুধ লিখেন, তারা তা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হিসেবে ধরে এক সপ্তাহের ওষুধ এক জীবন চালাতে থাকেন। পাশের বাসার ভাবি, অফিসের কলিগ, স্কুলের বন্ধু, পাড়ার দোকানদার, সকলের কাছ থেকে তারা চিকিৎসা নিয়ে বেড়ান।
ওষুধ আসলে কোনো বিলাসদ্রব্য নয়। এটি প্রয়োজন ছাড়া যেমন খাওয়া উচিত নয়, আবার যখন দরকার, তখন না খেলেও সমস্যা।
কার, কি, কতটুকু ওষুধ দরকার—তা জানতে হাজারো কোটি চিকিৎসক অমানবিক পরিশ্রম করেন। তাই ওষুধ কখনোই পাশের বাসার খালাম্মা, পাড়ার কাকু কিংবা ওষুধের দোকানদারের পরামর্শক্রমে একেবারেই খাওয়া উচিত নয়।
ওষুধ যেমন জীবন বাঁচায়, আবার সঠিক প্রয়োগ না হলে তা হতে পারে মৃত্যুর কারণ। আবার একেবারে সঠিক ওষুধেও কখনো কখনো প্রাণসংহারী জটিলতা হতে পারে, যা আগে থেকে চিকিৎসক কোনোভাবেই অনুমান করতে পারেন না।
প্রয়োজনে ওষুধ না খেলে রোগ বাড়ে, জটিলতা বাড়ে। দেশের অগণিত কিডনি রোগের পেছনে আছে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস আর রক্তচাপের ইতিহাস। রক্তচাপ, রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে না রাখলে অনায়াসে স্ট্রোক বা অন্যান্য সমস্যার সৃষ্টি হয়। আবার অতিরিক্ত মাত্রায় ওষুধ সেবনের কারণেও কিডনি বিকল হতে পারে খুব সহজে।
সব ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, বেহুদা ওষুধ খেয়ে বেড়ালে যে কোনো সময় যে কোনো সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে এন্টিবায়োটিক যেমন-তেমনভাবে খেলে তা রোগ জীবাণুর বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলে, পরবর্তীতে ওই ওষুধ কার্যকারিতা হারায়।
তাই বলি, নানান কারণে ওষুধ তো খেতেই হয়, প্রয়োজন থাকলে খেতে হবেও। তবে যাই খান, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খান। আপনি বাঁচুন, ডাক্তারদেরও বাঁচতে দিন।

কমিউনিটি ক্লিনিকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির অনুষ্ঠানে ডা. মোদাচ্ছের
কমিউনিটি ক্লিনিক: বঙ্গবন্ধুর দর্শনই প্রধানমন্ত্রীর হাতে বাস্তবায়ন
কমিউনিটি ক্লিনিকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির অনুষ্ঠানে ডা. মোদাচ্ছের
কমিউনিটি ক্লিনিক: বঙ্গবন্ধুর দর্শনই প্রধানমন্ত্রীর হাতে বাস্তবায়ন
কমিউনিটি ক্লিনিকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির অনুষ্ঠানে ডা. মোদাচ্ছের
কমিউনিটি ক্লিনিক: বঙ্গবন্ধুর দর্শনই প্রধানমন্ত্রীর হাতে বাস্তবায়ন
