ওয়ার্ল্ড ওরাল হেলথ ডে: দাঁতের সুরক্ষায় যত্নবান হওয়া জরুরি

মেডিভয়েস রিপোর্ট: দাঁত মানুষের শরীরের আয়না। তাই দাঁতের যত্নে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৩ সাল থেকে প্রতিবছর বিশ্বের প্রায় সবদেশে ২০ মার্চ পালিত হয় ওয়ার্ল্ড ওরাল হেলথ ডে। নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে।
গবেষণা বলছে, মুখের সঠিক যত্ন মুখগহ্বরে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার পাশাপাশি শারীরিক সুস্থতায়ও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই মুখের যত্নে আর অবহেলা নয়।
সাধারণ স্বাস্থ্যের মতই গুরুত্বপূর্ণ মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য। মানব দেহে ক্যালরি নামে যে জ্বালানির প্রয়োজন হয়, তা খাবার থেকে হয়। আর মুখের মাধ্যমে সে খাবার দেহে প্রবেশ করে। ফলে মুখের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার বিকল্প নেই।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, মুখগহ্বর, দাঁত, মাড়ি সুস্থ থাকলে ব্যক্তিত্বেরও বিকাশ ঘটে। মৌখিক স্বাস্থ্য খারাপ হলে তার থেকে শুধুমাত্র মুখগহ্বরের অসুখই হয় এমন নয়; হৃদযন্ত্রের অসুখ, ডায়াবেটিস মেলিটাস, স্ট্রোক, শ্বাস সংক্রান্ত সমস্যা, কখনও কখনও অন্তঃসত্ত্বা মহিলার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রসব হয়ে যেতে পারে।
দিবসটিতে দিনব্যাপী কর্মসূচির আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটি। এদিকে ‘ওয়ার্ল্ড ওরাল হেলথ ডে’ উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, উন্নয়ন অগ্রযাত্রা বেগবান রাখতে জনগণের সুস্বাস্থ্য একটি অপরিহার্য পূর্বশর্ত।
বাণীতে তিনি দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণের মাঝে মুখ ও দাঁতের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির উদ্যোগে ২০ মার্চ জাতীয় পর্যায়ে ওয়ার্ল্ড হেলথ ডে উদ্যাপন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের স্বাস্থ্যখাতের বিশাল সাফল্য জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদনে ইতোমধ্যে ফুটে উঠেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা দেশের ডেন্টাল সার্জনদের জন্যে পর্যায় ক্রমিক বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি পদ সৃজন, উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পেশাগত উন্নয়নের জন্যে নিয়মিত কর্মসূচি প্রণয়ন, তিনটি বিভাগীয় শহরে পূর্ণাঙ্গ ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠাসহ এই পেশার মানোন্নয়নে বিশেষ উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, সঠিক প্রচারণা, পলিসি নির্ধারণ এবং জনগণের দোরগোড়ায় আধুনিক চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিয়ে আমাদের সরকার স্বাস্থ্যখাতে এক যুগান্তকারী বিপ্লবের সূচনা করতে সক্ষম হয়েছে। জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি, বাংলাদেশ জনসংখ্যা নীতি, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইন, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, রক্ত পরিসঞ্চালন আইন, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন ইত্যাদি প্রণয়ন করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী এবং জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণ নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সব দপ্তর নিজস্ব ওয়েব সাইটের মাধ্যমে তাদের যাবতীয় কার্যক্রম ও তথ্য জনগণকে পৌঁছে দিচ্ছে। বাংলাদেশে স্বাস্থ্যখাতের এই উন্নয়ন ও বৈপ্লবিক অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে আমাদের সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও আপনাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও জনগণের সম্মিলিত অংশ গ্রহণের মাধ্যমে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বে প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ শুধুমাত্র মুখগহবরের সঠিক যত্ন না নেওয়ার কারণে দাঁত, মুখসহ শারীরিক নানাবিধ জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী উদযাপিত এই দিবসের মাধ্যমে ওয়ার্ল্ড ডেন্টাল ফেডারেশন এ ব্যাপারে যে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
এএইচ