অর্থ নয়, অনুভূতির ঐশর্যের জন্য লেখালেখি: ডা. মাহবুব মোতানাব্বি

অধ্যাপক ডা. মাহবুব মোতানাব্বির সাহিত্য চর্চায় হাতেখড়ি স্কুলজীবন থেকেই। সৃষ্টিশীল এ অঙ্গনের বিভিন্ন শাখায় কাজ করলেও ছোট গল্পই তাঁকে বেশি টানতো। ভালোলাগা ও পারিপার্শ্বিকতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অনবরত লিখে যান সমকালের ঘটনাপ্রবাহ অবলম্বনে জীবন কাহিনী নির্ভর অসংখ্য ছোট গল্প। স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে মেডিকেলে ভর্তির পর থেকে লিখতে থাকেন দুই হাত ভরে। একের পর এক বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ছাপতে থাকে তাঁর লেখা গল্প-কবিতা।
মেডিকেল শিক্ষার উচ্চতর ডিগ্রি এফসিপিএস অর্জনের পর থমকে দাঁড়ায় সাহিত্য চর্চা। তবে পেশাগত ব্যস্ততার মধ্যেই চালিয়ে যান লেখালেখি।
সতীর্থ ও শুভাকাঙক্ষীদের পরামর্শে এসব লেখা প্রকাশের তাগিদ অনুভব করেন। এবারের অমর একুশে বইমেলায় এরই প্রথম প্রয়াস ‘লেলিহান সময়ের গল্প’।
পেশায় অপেক্ষাকৃত বেশি মনোযোগিতার কারণে সাহিত্য নিয়ে লেখকের কাজগুলো কিছুটা আড়াল হয়ে যায়। লেলিহান সময়ের গল্প বইকে কেন্দ্র করে তাঁর লেখক সত্তার বিষয়টি আবারও পাদপ্রদীপের আলোয় আসে।
উপজীব্য ও নামের স্বার্থকতা
অধ্যাপক ডা. মাহবুব মোতানাব্বি বলেন, সাহিত্যের বিভিন্ন শাখা নিয়ে কাজ করলেও মূলত যে অংশ নিয়ে কাজ করি, তা হলো ছোট গল্প। এক সময়ের গতিশীল এ ধারা বর্তমানে আমাদের গণ্ডির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও অতটা বেগবান না। মূলত বর্তমান সময়টা ফিকশন অর্থাৎ পূর্ণ উপন্যাসের দিকে চলে গেছে। অধুনা এ ধারা চলে গেছে নন-ফিকশনে। আগে বই বলতেই বুঝতাম গল্পের বই, ছোট গল্প বা উপন্যাস। কোনো শিক্ষার্থী পাঠ্যসূচির বাইরে বই পড়লে অভিভাবকরা বাধা দিতেন। তখন পাঠ্যসূচির বাইরে বই মানেই শরৎ চন্দ্র, বঙ্কিম চন্দ্রের উপন্যাস। এখন এটি পরিবর্তন হয়েছে, এমনকি আমিও লেখার ধারা পরিবর্তন করেছি। প্রকাশের অপেক্ষায় থাকা আমার একাধিক বইয়ের অধিকাংশই নন-ফিকশন। জীবন ধারা, জীবন কাহিনী ও জীবন অভিজ্ঞতা—এসবই ঠাঁই পেয়েছে বইয়ে। তবে লেলিহান সময়ের গল্পে আমি নিজের কাহিনী নয়, মূলত বাংলাদেশের পটভূমি, বিশেষ করে ছোট্ট এ জীবনে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ঘটনা, পরিস্থিতি অবলোকন করেছি। সেগুলোই ছোট গল্পে উপজীব্য করে তোলা হয়েছে। সেই কারণে নামকরণ করা হয়েছে লেলিহান সময়ের গল্প। যেই সময়টা আমাদেরকে নানাভাবে আলোড়িত করছে। অর্থাৎ নানা উত্তাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। গল্পে সেই সময়টাই ধারণ করা হয়েছে। এখানে মোট ১১টি ছোট গল্প মলাটবদ্ধ হয়েছে।
লেখক জানান, গল্প গ্রন্থে তৃণমূল থেকে শুরু সমাজের সর্বোচ্চ স্তরের মানুষের গল্প স্থান পেয়েছে। শত বছর পর পড়লেও বর্তমান সময়ের চমৎকার একটি চিত্র খুঁজে পাবেন পাঠক।
প্রচ্ছদের প্রাসঙ্গিকতা
প্রচ্ছদের প্রাসঙ্গিকতার কথা তুলে ধরে লেখক বলেন, বর্তমান সময়ে প্রচ্ছদের একটি চমৎকার ধারা তৈরি হয়েছে। আগের বইগুলো, যেমন—শরৎ চন্দ্র, বঙ্কিম চন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের বইয়ের প্রচ্ছদ তৈরি হতো মূল চরিত্রকে কেন্দ্র করে। তখন কেন্দ্রীয় চরিত্রের রূপই শোভা পেতো প্রচ্ছদে। কিন্তু এখন থিম বা ঘটনাপ্রবাহকে প্রচ্ছদে রূপ দেওয়া হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো ব্যক্তি বা চরিত্রকে কেন্দ্র করে প্রচ্ছদ তৈরি হয় না। প্রথিতযশা একজন শিল্পী লেলিহান সময়ের গল্পের প্রচ্ছদ এঁকেছেন। তিনি বিমূর্তভাবে গল্পের বিষয়গুলোতে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। একটু মনোযোগ দিলেই বোঝা যাবে, বিষয়বস্তুর প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরতে এখানে আনন্দ ও বেদনাসহ অনেকগুলো রঙের মিশেল ঘটানো হয়েছে। বিভিন্ন সময় আমাদেরকে তপ্ত পরিস্থিতি মাড়িয়ে যেতে হয়, প্রচ্ছদের উপরের অংশের শিখায় তার ইঙ্গিত রয়েছে। এসবের মধ্যে জীবন কিভাবে এগিয়ে চলেছে, তা বোঝানো হয়েছে। প্রচ্ছদে মানব অবয়বেরও একটি নমুনা বোঝা যাবে।
যে কারণে ছোট গল্প
তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে সাহিত্যের প্রথম ধারাই হলো কথা সাহিত্য (ফিকশন)। এমনকি আমাদের বিজ্ঞানের বইয়েও কথা বা গল্পের মাধ্যমে সূচনার পর মূল বিষয়ের অবতারণা করা হয়। সুতরাং সাহিত্য চর্চায় পৃথিবীর আদিতম যোগাযোগের মাধ্যম গল্প বা কাহিনী। এটা ছোটও হতে পারে, আবার শত শত পৃষ্ঠার বড় উপন্যাসও হতে পারে। এর এমন কারুকার্য, যার সম্মোহনী শক্তি মানুষকে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখে। ছোটবেলায় এসব বই পড়ে আমার ধারণা হলো, গদ্যের কোনো বিষয় নিয়ে কাজ করতে চাইলে বিশাল উপন্যাস লেখারও সুযোগ আছে, আবার ছোট ছোট গল্পও লেখা যাবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্পগুচ্ছ, যেখানে অল্প কলেবরে বিশাল ভাব তুলে ধরা হয়েছে। এক অর্থে এসব গল্পে উপন্যাসের চেয়ে একজন লেখকের ভাষা ও ভাবের কারুকাজের দক্ষতা প্রমাণের সুযোগ বেশি। সাহিত্য চর্চায় ছোট গল্পে ঝুঁকে পড়ার এটিও অন্যতম কারণ। আরেকটি কারণ হলো, পেশাগত ব্যস্ততার মধ্যে অল্প সময় যদি সাহিত্য চর্চার সুযোগ পাই, তাহলে ছোট গল্পেই এর প্রতিফলন ঘটানো সম্ভব। এ ক্ষেত্রে বড় কোনো কাজে হাত দিলে দেখা যাবে পরিণতির দিকে নেওয়া জটিল হয়ে যাবে। যারা বেসিক সাইডের মানুষ, তাদের লেখালেখিসহ অন্য কাজের সঙ্গে ভালোভাবে সমন্বয় করতে পারেন। কিন্তু আমি একজন ক্লিনিশিয়ান। ফলে আমার পক্ষে দুই ঘণ্টা কিংবা দুই মিনিট অবসর থাকার নিশ্চয়তাও নেই। ফলে ছোট গল্প লেখায় নিজেকে যুক্ত রাখা আমার জন্য সহজতর মনে হয়।
সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চায় চারপাশের মানুষের অকৃত্রিম সহযোগিতায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ডা. মাহবুব মোতানাব্বি বলেন, একজন ব্যক্তির কর্মজীবন তাঁর পারিপার্শ্বিক পরিবেশের কাছে অনেকাংশে ঋণী। সময়, পরিবেশ, কর্মস্থল ও কর্মধারা অনুকূল না হলে অনেক প্রতিভার ইষৎ স্ফুরণ হয়ে আবার ফুরিয়ে যায়।
বই প্রকাশের উদ্যোগ যেভাবে
বই প্রকাশের উদ্যোগের নেপথ্যে একাধিক শুভাকাঙ্ক্ষীর উৎসাহের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আহসান হাবীবের সঙ্গে দৈনিক বাংলায় সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন নাসির আহমেদ। সম্প্রতি চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে বিএসএমএমইউতে তাঁর সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়। নাসির আহমেদ বলেন, অবশ্যই আপনার লেখা প্রকাশ হওয়া উচিত। তখন ভাবলাম, আমার যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লেখাগুলোও চলে যাবে, তা হতে পারে না। এ প্রসঙ্গে আরেকজনের কথা বলতে হবে, তিনি সাপ্তাহিক বিচিত্রার মইনুল আহসান সাবের। বিচিত্রায় আমার একাধিক লেখা প্রকাশ করেছেন তিনি। আহসান সাবের বললেন, আপনি নিজের প্রতি অবিচার করছেন। সেজন্যই প্রকাশের উদ্যোগ।
‘এখনো হাতে ছোট গল্পের একাধিক মেনু স্ক্রিপ্ট আছে, নন-ফিকশন। অর্থাৎ পাকিস্তান আমল, মুক্তিযুদ্ধ ও তার পরবর্তী সময়, মেডিকেল লাইফের সময়; সেটা এখানে উপজীব্য করে তোলা হয়েছে। সেখানে আমি নিজে গৌন হয়ে সময়টাকে তুলে ধরেছি। এ রকম মোট ৫টি মেনু স্ক্রিপ্ট হাতে আছে’, যোগ করেন লেখক।
তিনি বলেন, হাজার হাজার বই বিক্রির জন্য না, মহাকালের বুকে সময় ও অনুভূতির চিহ্ন যাতে লিপিবদ্ধ থাকে, সেজন্য লিখেন। অন্তত একজন পাঠক পড়ুক, একজন অনুভূতিটা উপলব্ধি করুক, তাতেই মহাপ্রাপ্তি।
তিনি আরও বলেন, বইমেলায় একজন জানালেন, অনেক আগে দৈনিক ইত্তেফাকে আমার লেখা পড়েছেন। তিনি বললেন, আমার লেখার ভঙ্গিটা অন্য সবার চেয়ে ভিন্ন। এ রকম একটি-দুটি লাইনই লেখককে বাঁচিয়ে রাখে। দুই-চার-পাঁচজন ছাড়া বেশিরভাগ লেখকই লিখে খুব পয়সা উপার্জন করতে পারেননি। সম্ভবত কোনো দেশেই না। তাহলে লিখেন কেন? সিকান্দার আবু জাফর জমি বিক্রি করে সমকাল প্রকাশ করেন। তার পরও লিখেছেন। লিখতে লিখতে ফতুর হয়ে গেছেন। সুতরাং অর্থের ঐশর্য নয়, অনুভূতির ঐশর্য লাভ করার জন্য লিখছেন তিনি।
লেখালেখিতে হাতে খড়ি
শৈশবে সাহিত্য চর্চায় আকৃষ্ট হওয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সাবেক ঢামেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘১৯৬৮ সনে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ার সময় কুমিল্পা জিলা স্কুলের ম্যাগাজিনে প্রথম তাঁর ছোট গল্প প্রকাশিত হয়। তখন স্কুল ম্যাগাজিনে অত বড় লেখা প্রকাশেরও সুযোগ ছিল না। ছোট বেলায় স্কুল বা কলেজে ক্লাসে কোনো শূন্যতা তৈরি হলে শিক্ষকবৃন্দ বলতেন, একজন আমাদেরকে কোনো গল্প শোনাও। তখন আমার ওপর দায়িত্ব পড়তো। এটা আমি কুমিল্লা জিলা স্কুল, ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজেও করেছি। অনেক সময় পাকিস্তানি হাবিলদাররা পিটি-প্যারেডের মাঝখানে বলতো, কেউ একটি গল্প বলো। এতে বলার একটি অভ্যাস তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া জিলা স্কুলে নিয়মিত বার্ষিকী বের হতো। এর সুবাদে তার মধ্যে লেখালেখির একটি প্রবণতা তৈরি হয়।’
তিনি আরও বলেন, লিখতে গিয়ে মনে হলো, কোনো ঘটনা লেখায় রূপ দিলেই গল্প হয়ে যায় না, বরং এতে ভাষা ও ভাবের কারুকাজ, অভাবনীয় সমাপ্তি টানাও জরুরি। এসব বিষয়ে নিকট অতীতে ছোট গল্প নিয়ে নানা রকম নীরিক্ষাও হয়েছে। লেলিহান সময়ের গল্পে ‘নারী’ শিরোনামে একটি গল্প আছে, এটা দুইভাবে শেষ হয়েছে।
শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক জীবন
অধ্যাপক ডা. মাহবুব মোতানাব্বির জন্ম কুমিল্লায়, ১৯৫৯ সালে। কুমিল্লা মডার্ন স্কুল দিয়ে তাঁর লেখাপড়ায় হাতে খড়ি। ১৯৭৪ সালে এসএসসি ও ১৯৭৬ সালে এইচএসসি পাস করেন। এসএসসিতে বোর্ডে তৃতীয় ও এইচএসসি পরীক্ষায় উনিশতম স্থান অর্জন করেন। এর পর ভর্তি হন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। সেখান থেকে ১৯৮৩ সালে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। ১৯৯৫ সনে পেডিয়াট্রিক্সে এফসিপিএস পাস করেন তিনি।
মডার্ন স্কুলে সাংস্কৃতিক একটি আবহ ছিল। সাহিত্যের পাশাপাশি গান, নাটকসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো সেখানে। সেখান থেকে বাবার চাকরির সুবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় চলে যান, সেখানে গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে পড়াশোনা করেন। কুমিল্লায় একেবারের উঁচু স্তরের পাশাপাশি গ্রামে সাধারণ স্তরের স্কুলে পড়ার অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ হয় তাঁর।
তিনি বলেন, আখাউড়ায় তিতাস নদীর পাড়, চার দিকের খোলা মাঠ, তার মনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। এটি ছোট বয়সে তাকে বিস্তৃতভাবে চিন্তা করার খোরাক জুগিয়েছে।
মাহবুব মোতানাব্বি বলেন, ক্যাডেট কলেজে পাঠ্য সূচির বাইরে বই পড়ার ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হয়। সেখানে উন্মুক্ত লাইব্রেরি ছিল। যে কোনো বই, যে কেউ নিয়ে পড়তে পারে। এর সুবাদে পড়ার একটি অভ্যাস তৈরি হয়। সেখানে প্রতি মাসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো। এক সময় কলেজের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রধান মনোনীত হন তিনি। এর ফলে বিভিন্ন প্রকাশনার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। তখন নিজের লেখার পাশাপাশি অন্যের লেখা প্রকাশের সুযোগ পান।
সংগঠক হিসেবে সমুজ্জ্বল
ঢাকা মেডিকেল কলেজে আসার সুবাদে বৃহত্তর পরিসরে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের কাছে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয় তার। এভাবে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রতি ঝুঁকে পড়েন। এ পথ ধরে ‘অনিয়মিত’ নামে একটি সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যিক সংগঠন গড়ে তুলেন। মেডিকেলে ব্যাপক পড়াশোনার মাঝে এসব কর্মকাণ্ড নিয়মিতভাবে চালানো সম্ভব হয়নি বলে সংগঠনটির নামকরণ করেন ‘অনিয়মিত’।
সাহিত্য চর্চার স্বীকৃতি
ডাক্তারি পড়াশোনার শেষ পর্যায়ে দেশসেরা সাহিত্যিক কবি শামসুর রহমান, আল মাহমুদ ও আহসান হাবীবের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। তিনি বলেন, ‘আহসান হাবীব দৈনিক বাংলায় প্রথম তার লেখা প্রকাশ করেন। তার লেখার মান বিশ্লেষণ করে আহসান হাবীব ভেবেছিলেন, মাহবুব মোতানাব্বি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তবে চিকিৎসক পরিচয় পেয়ে তাঁর এই ভুল ভাঙে। বিষয়টি ডা. হুমায়ুন আহমেদকে জানালে তিনি বলেন, হাবীব ভাই যদি আপনার লেখা ছেপে থাকেন বা উৎসাহ দিয়ে থাকেন, তা যথার্থই। কারণ তিনি নিজের আত্মীয়-স্বজনের লেখাও কারও অনুরোধ বা সুপারিশে ছাপেন না। এই কথা শুনে আল্লাহর রহমতে আমার মধ্যে বিরাট আত্মবিশ্বাস জন্ম দেয়। সেই থেকে শুরু, ৯০-৯৫ সন পর্যন্ত দুহাতেই লিখে গেছি। পরবর্তীতে এফসিপিএস পাস করার পর কনসালটেন্ট হই। এর পর সীমাহীন ব্যস্ততার ভিড়ে লেখায় ধারাবাহিকতা ধরে রাখা যায়নি। এর পর থেকে দৈনিক বা সাপ্তাহিকে লেখালেখি বন্ধ হয়ে যায়। তবে নিজ উদ্যোগে সৃষ্টিশীল ধারার সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখি।’
এমইউ
-
২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩