ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের ১১.৮ শতাংশ সদস্যের শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে: ক্যাপস

মেডিভয়েস রিপোর্ট: ট্রাফিক পুলিশ ও পথচারীরা শব্দদূষনের প্রত্যক্ষ শিকার হন বলে জানিয়েছে পরিবেশবাদি সংগঠন বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যায়ণ কেন্দ্র (ক্যাপস)।
আজ বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে পরিবেশ অধিদপ্তরের ‘শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প’র আওতায় গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের নিয়ে একটি সচেতনতামূলক মতবিনিময় সভা এ কথা জানানো হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা) বেগম ফারহানা মুস্তারী এর সভাপতিত্বে উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. সোহেল রানা।
স্বাগত বক্তবে ক্যাপস’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘ক্যাপস এর গবেষনায় দেখা যায় যে পেশাগত দায়িত্বে থাকা ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের ১১.৮ শতাংশ সদস্যের শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং ৩৩.৯ ভাগ ট্রাফিক পুলিশের অন্যদের কথা শুনতে কষ্ট হয়। শব্দ দূষণ সহ পরিবেশ দূষণ রোধে আমাদের দেশে পর্যাপ্ত আইন রয়েছে, তবে আইনের প্রয়োগ হোক সর্বেশেষ পদক্ষেপ এবং সচেতনতাই হোক সর্বপ্রথম পদক্ষেপ।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. সোহেল রানা বলেন, ‘শব্দদূষনের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে, যানবাহনের সৃষ্ট শব্দদূষনের প্রত্যক্ষ শিকার ট্রাফিক পুলিশ ও পথচারীরা। শব্দ দূষণরোধে যানবাহন এবং নির্মাণ কাজে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের উপর গুরত্ব আরোপ করেন।’
সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক (প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা) বেগম ফারহানা মুস্তারী বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর শুরু থেকেই শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করে আসছে। এই প্রকল্পের অধীনে পরিবেশ অধিদপ্তর নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আসছে, শব্দদূষণ রোধে বাংলাদেশ পুলিশ প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা একান্তই কাম্য।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিডফোর্ড হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডা. আমজাদ হোসেন বলেন, ‘২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশের ৯.৬% জনগণ অর্থাৎ ১ কোটি ৩৪ লাখ মানুষ কোন না কোন ধরনের শ্রবণ হ্রাসজনিত জটিলতায় ভুগছে। এই শ্রবণ হ্রাসের অন্যতম মূল কারণ শব্দদূষণ। শব্দদূষণ ক্রমাগত এক্সপোজার মানুষের শ্রবণ শক্তি কমিয়ে দেয়ার পাশাপাশি মানসিক অবসাদ তৈরি করে। চিকিৎসার চেয়ে শব্দদূষণ প্রতিরোধ আমাদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।’
এছাড়াও উক্ত মতবিনিময় সভায় ট্রাফিকপুলিশ ও গাড়িচালকরা শব্দ দূষণ নিয়ে তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, সংকট ও সমাধানের উপায় নিয়ে বিস্তর মতপ্রকাশ করেন।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের চীফ কার্ডিওলজি কনসালটেন্ট ডা. এম এ বাকি, বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. শিফুন নেওয়াজ। সভায় প্রকল্প সংশ্লিষ্ট তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন প্রকল্পের মাঠ সমন্বয়ক ইঞ্জি. মো. নাছির আহম্মেদ পাটোয়ারী। এছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সার্জেন্ট, ট্রাফিকগণ, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীগন, বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সামাজিক ও পরিবেশবাদি বিভিন্ন সংস্থার সদস্যবৃন্দ।
এসএস