
ডা. সাদাব সাউদ সানী
মেডিকেল অফিসার (৩৩তম বিসিএস), ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (২০০৫-০৬)
২১ জানুয়ারী, ২০২৩ ১২:৫০ পিএম
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস রোগে আক্রান্ত নারীর গর্ভধারণের পূর্বে করণীয়

বিভিন্ন ধরনের আর্থ্রাইটিসের মধ্যে রিউমাটয়েড একটি। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস রোগে আক্রান্ত রোগীদের জয়েন্ট ও গিরায় ব্যথা, ফোলাভাব ও শক্ত হয়ে যায়। এ রোগের নির্দিষ্ট কোনো কাররণ এখনো জানা যায়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হলে, এই রোগটি মানবদেহের জয়েন্টগুলিতে আক্রমণ করে।
লক্ষণ
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের কিছু লক্ষণ রয়েছে, যা শুধু চিকিৎসকরা বলতে পারবেন। এই রোগের কিছু উপসর্গ আছে। যেমন- আঙ্গুলের ছোট জয়েন্টগুলোতে, পায়ের বল এবং কব্জিকে প্রভাবিত করে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস সাধারণত শুরু হয়। এটি সাধারণত একই সময়ে ডান-বাম উভয় দিককে প্রভাবিত করে। (অন্যান্য ধরনের আর্থ্রাইটিস প্রথমে বৃহত্তর জয়েন্টগুলিকে প্রভাবিত করে। যেমন: হাঁটু বা নিতম্ব একসঙ্গে আক্রান্ত হয়।
এই রোগটি হাতের আঙ্গুল এবং পায়ের আঙ্গুলে শুরু হতে পারে। তবে বাতজনিত আর্থ্রাইটিস যে কোনো জয়েন্টকে প্রভাবিত করতে পারে। কখনও কখনও এটি জয়েন্টের চিরতরে ক্ষতি করে। এ ছাড়া রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস শরীরের অন্যান্য অংশে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যেমন: হার্ট, ফুসফুস ও চোখ। চিকিৎসক জানার কোনও উপায় নেই যে, কোন লোকে কোন লক্ষণগুলো পাবে বা লক্ষণগুলো কতটা খারাপ হবে।
করণীয়
চিকিৎসক যদি আপনাকে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস হিসেবে শনাক্ত করেন, তাহলে এখনই চিকিৎসা শুরু করুন। আপনার লক্ষণ খারাপ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না। দ্রুত চিকিৎসা করলে রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব।
চিকিৎসা
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের জন্য কয়েক ডজন ওষুধ রয়েছে। এগুলোর মধ্য থেকে রোগের উপসর্গ দেখে সঠিক ওষুধ নির্ধারণ করতে হবে। যেমন-
১. রোগীর অবস্থা কতটুকু খারাপ হয়েছে।
২. আক্রান্ত রোগীর জয়েন্টগুলোর কতটুকু প্রভাবিত হয়েছে।
৩. কিভাবে রোগটি সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়েছে।
৪. রোগী যে ওষুধগুলো সেবন করেছেন, তাতে কী ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়?
৫. নির্দিষ্ট রক্ত পরীক্ষার ফলাফলের উপর নির্ভর করে ওষুধ খেতে হবে।
সুস্থ থাকতে করণীয়
আপনার সক্রিয় থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাথায় ভুগছেন বলে আপনি হয়তো অলস থাকতে পারেন। এতে অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে। তাই চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া শুরু করুন। প্রচুর ফলমূল এবং শাকসবজি খেতে হবে।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস রোগে আক্রান্ত নারীর গর্ভধারণের পূর্বে করণীয়
চিকিৎসকেরা যত দিন বাতরোগে আক্রান্ত নারীকে সন্তান ধারণের জন্য উপযুক্ত মনে করছেন না, তত দিন নিরাপদ জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। সন্তান ধারণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। হয়তো ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতির পরিবর্তন দরকার হতে পারে। রোগের তীব্রতা নিয়ন্ত্রণে না এনে হঠাৎ গর্ভধারণ করা বিপজ্জনক। গর্ভধারণের আগে থেকেই ফলিক অ্যাসিড খেতে হবে। গর্ভাবস্থায় রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের উপসর্গ প্রায়ই অনেক ভালো হয়ে যায়, কিন্তু শিশুর জন্মের পর আবার খারাপ হতে পারে।
এআইডি/এএইচ