০৯ জানুয়ারী, ২০২৩ ০১:২০ পিএম

কবিরাজি চিকিৎসায় বিকল হতে পারে কিডনি

কবিরাজি চিকিৎসায় বিকল হতে পারে কিডনি
বাংলাদেশ প্রতিবছর যেখানে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করা প্রয়োজন ৫ হাজার, সেখানে হচ্ছে মাত্র ২০০।

মেডিভয়েস রিপোর্ট: দেশে ব্যাপক হারে বাড়ছে কিডনি রোগ। অসংক্রামক এই ব্যাধিতে ভুগছেন প্রায় দুই কোটি মানুষ। প্রতি বছর আক্রান্ত হয় ৩০-৪০ হাজার মানুষ। এসব রোগীদের চিকিৎসা নিতেও পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। বাংলাদেশে প্রতিবছর যেখানে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করা প্রয়োজন ৫ হাজার, সেখানে হচ্ছে মাত্র ২০০।

এমনই প্রেক্ষাপটে রোববার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে সেমিনারের আয়োজন করে কিডনি বিশেষজ্ঞদের সংগঠন বাংলাদেশ ইউরোলজিক্যাল সোসাইটি। এ সময় কিডনি রোগ প্রতিরোধে জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রত্যেকটি মেডিকেলে ইউরোলজি বিভাগ চালু করার উপর গুরুত্বারোগ করেন বিশেষজ্ঞরা।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ইউরোলজিক্যাল সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. সুদীপ দাস গুপ্ত বলেন, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এসব রোগগুলো ক্ষতিকর প্রভাব কিডনি উপর আছে। এ ছাড়া বয়স্কদের পোস্টেটে সমস্যা তো আছেই। আমাদের গড় আয়ু বাড়ার সাথে সাথে এ রোগও বেড়ে যাচ্ছে। এখনই সবাইকে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি ও কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. তৌহিদ মো. সাইফুল হোসেন দিপু বলেন, এখন যে পদ্ধতি মেডিকেল শিক্ষাব্যবস্থা চলছে, তাতে করে এক সময় জনসংখ্যার অনুপাতে ইউরোলজিস্ট তৈরি হয়ে যাবে। তবে সমস্যা হলো- ইউরোলজিস্টদের কাজ করার স্থান খুবই কম। যুগোপযোগী পরিকল্পনা নিয়ে এসব সমাধান করতে হবে।

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের পাশাপাশি কিডনি রোগের অপচিকিৎসা বন্ধেরও আহ্বান জানান তারা।

এ প্রসঙ্গে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ইউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. রুহুল আমিন বলেন, কিডনি রোগীদের লবন ও চর্বি জাতীয় খাবার পরিত্যাগ করতে হবে। প্রতিনিয়ত পরিমিত ব্যায়াম করতে হবে। সেইসঙ্গে শাক-সবজি খেতে হবে।

জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. মিজানুর রহমান বলেন, সবাইকে অপচিকিৎসা থেকে বিরত থাকতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ কিনে খাওয়া যাবে না। হোমিও, কবিরাজি এবং ফুটপাতের চিকিৎসাতেও কিডনি বিকল হতে পারে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, কিডনি প্রতিস্থাপন সহজ করার লক্ষে আইন পাস করা হয়েছে। তুলে ধরেন, অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে নানা উদ্যোগ ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়নের কথা।

তিনি বলেন, কিডনিসহ অসংক্রামকের রোগের চিকিৎসা আস্তে আস্তে আমরা বাড়িয়ে চলছি। আট বিভাগে আটটি হাসপাতাল হচ্ছে। সেখানে ৫০ ইউনিট থেকে ১০০ বা ১৫০ ইউনিটে সম্প্রসারিত করা যাবে।

তিনি আরও বলেন, করোনার মধ্যে স্বাস্থ্যখাতে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। আমরা করোনা প্রতিরোধে প্রায় ৩৪ কোটি ভ্যাকসিন দিয়েছি। এসব কার্যক্রমের সফলতার জন্য বিশ্বে পঞ্চম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম হয়েছে বাংলাদেশ।

জেলা পর্যায়ে কিডনি রোগীদের চিকিৎসা চালুর কথা জানিয়ে স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়নে ডিজিটালাইজেশনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, প্রতিটি জেলায় জেলা হাসপাতালে ১০ বেড ডায়ালাইসিস ইউনিট এবং ১০ বেড আইসিইউ ইউনিট চালু করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এগুলো চালু হয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজ করা হবে। এতে সেবা মানুষের আরও হাতের নাগালে চলে যাবে।

এ সময় অসংক্রামক রোগী-ব্যাধি রোধে স্বাস্থ্যব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কথাও স্বীকার করেন জাহিদ মালেক। সেইসঙ্গে ধীরে ধীরে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  ঘটনা প্রবাহ : কিডনি রোগ
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
করোনা ও বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা

এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক