১৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১২:৪০ পিএম

আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে অসংক্রামক রোগ

আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে অসংক্রামক রোগ
১৯৭১ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৫১ বছরে আমরা স্বাস্থ্যসেবায় অনেক অর্জন করেছি কিন্তু দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে ক্যান্সার, হৃদরোগসহ অসংক্রামক রোগগুলো।

মেডিভয়েস রিপোর্ট: স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে দেশে স্বাস্থ্য খাতে অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। এত সফলতার পরও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে অসংক্রামক রোগগুলো, যা সব অর্জনগুলোকেই ম্লান করে দিচ্ছে।

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আয়োজিত ‘বিজয়ের ৫১ বছরে স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের অর্জন’ শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন ও সেন্ট্রাল সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

তারা বলেন, শিশু-মাতৃমৃত্যু রোধ, টাইফয়েড, পোলিও, ডায়রিয়া, আমাশয়সহ সব সংক্রামক রোগগুলো প্রায় নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। আটটি মেডিকেল কলেজ থেকে বর্তমানে ১১৩টি মেডিকেল কলেজ হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯৭১ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৫১ বছরে আমরা স্বাস্থ্যসেবায় অনেক অর্জন করেছি কিন্তু দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে ক্যান্সার, হৃদরোগসহ অসংক্রামক রোগগুলো। এগুলোতেই বর্তমানে বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে।

তিনি বলেন, অ্যান্টিবায়োটিক এখন মানুষের কাছে স্বাভাবিক খাবারে পরিণত হয়েছে। এ জন্য আর  ঠিক মতো অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছে না। এ ছাড়া গরু, মুরগিকে যে খাবার দেওয়া হচ্ছে সেগুলোতে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে। যে কারণে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হচ্ছে। আমাদের অসংখ্য মানুষের কিডনি ড্যামেজ হচ্ছে, কারণ আমরা যখন-তখন ব্যথানাশক ওষুধ খাচ্ছি। আশঙ্কাজনক হারে কিডনি রোগী বেড়ে গেছে। 

ডায়াবেটিসে আক্রান্তের পরিমাণ বাড়ছে জানিয়ে শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ডায়াবেটিস প্রিভেনশনে আমাদের একটা গবেষণা শুরু হয়েছে। এটা সফল হলে আমাদের দেশের রোগীদের আর ডায়াবেটিসের জন্য লাখ লাখ টাকা খরচ করতে হবে না। 

তিনি বলেন, ‘আমি যতদিন থাকব, গবেষণা না করলে পদোন্নতি পাওয়া যাবে না। গবেষণা পেপার না থাকলে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হওয়া যাবে না, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর থেকে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর বা প্রফেসরও হওয়া যাবে না।’

গবেষণা প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন বলেন, গবেষণায় আমাদের বরাদ্দ খুবই কম ছিল, বর্তমান সরকার এসে এই খাতে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এখন আমাদের গবেষণাগুলো দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাবে এবং মানসম্মত গবেষণা আমরা উপহার দিতে পারব। আগামী এক বছরের মধ্যে আন্তর্জাতিক সেরা গবেষণাপত্রগুলোতে বাংলাদেশের গবেষণাগুলো স্থান পাবে।

তিনি বলেন, গত তিন বছর করোনা মহামারিতে আমাদের চিকিৎসকরা নিজেদের উজাড় করে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি মানুষ এ সময়ে দেশে চিকিৎসা নিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. জাহিদ হাসান বলেন, আমরা শিশু সার্জারির উন্নয়ন করার চেষ্টা করছি, যে সার্জারিগুলো দেশে হতো না, এগুলো আমরা ভারত থেকে এনে করছি। শিশুদের প্রায় ৯৮ শতাংশই এখন দেশে চিকিৎসা নেয়।

তিনি বলেন, আটটি বিভাগের আটটি বিশেষায়িত হাসপাতালে আমরা একটি করে শিশুদের বিভাগ চেয়েছিলাম। বিষয়টির গুরুত্ব আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বুঝাতে পারলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে বোঝাতে পারিনি। কোনোমতেই তাকে বিষয়টা বোঝাতে পারিনি। একনেকে বিভাগটির অনুমোদন হলেও অবশেষে তালিকা থেকে তিনি শিশু বিভাগের নামটা কেটে দেন।

এ সময় বিএসএমএমইউ প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  ঘটনা প্রবাহ : বিএসএমএমইউ
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
করোনা ও বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা

এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক