স্বল্প বয়সীদের হৃদরোগে আক্রান্তের হার বৃদ্ধি পেয়েছে: গবেষণা

মেডিভয়েস রিপোর্ট: দেশে স্বল্প বয়সীদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানা গেছে এক গবেষণায়। আজ সোমবার (৩১ অক্টোবর) বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কার্ডিওলজি বিভাগের একাডেমিক অ্যান্ড রিসার্চ সেল ও ইউনিভার্সিটি কার্ডিয়াক সেন্টার আয়োজিত এক সেমিনারে গবেষণার ফল জানানো হয়েছে।
গবেষণা বলছে, দেশে ইস্কেমিক হার্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে তুলনামূলক বেশি মানুষ অকাল মৃত্যুবরণ করছে। এ সংখ্যা লাখে ২০৩ দশমিক সাত জন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. এসএম মোস্তাফা জামান।
সেমিনারে গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার গড় বয়স ৫৩ বছর, যেখানে পুরুষ রোগী ৮৮ শতাংশ। এ ছাড়া বর্তমানে দেশে ৪৬ শতাংশ হৃদরোগীর বয়স ৫০ বা এর নিচে।
এতে বলা হয়েছে, দেশে সাড়ে ৪ শতাংশ মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে নারী সাড়ে তিন শতাংশ ও পুরুষ ছয় শতাংশ। দক্ষিন এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশীরাই করোনারী ধমনী রোগের (করোনারি আর্টারি ডিজিজ) প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি।
অন্য একটি গবেষণায় দেখা যায়, এশিয়ার অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ এ আক্রান্ত হয়ে তুলনামূলক বেশি মানুষ অকাল মৃত্যুবরণ করছে। যা প্রতি এক লাখে ২০৩ দশমিক সাত শতাংশ, শ্রীলংকায় ৮৪ দশমিক পাঁচ জন, পাকিস্তানে ২২২ দশমিক নয় জন, নেপালে ১৫২দশমিক ছয় জন, মিয়ানমারে ১৬৪ দশমিক সাত জন, মালদ্বীপে ৫০ দশমিক নয় জন, ভারতে ১৬৫ দশমিক আট জন, ভুটানে ২২১ দশমিক সাত জন, আফগানিস্তানে ৩২৮ দশমিক ছয় জন।
বাংলাদেশ স্টেপস সার্ভে ২০১৮ এর মতে, ২০১৭ সালে বাংলাদেশের মোট মৃত্যুর ৭৩ দশমিক দুই শতাংশ ঘটেছে অসংক্রামক ব্যাধিতে। তার মধ্যে কার্ডিওভাস্কুলার রোগে- ৩৬ দশমিক এক শতাংশ, ক্যান্সার ১১ দশমিক দুই শতাংশ, ক্রনিক রেস্পাইরেটরি ডিজিজ নয় দশমিক তিন শতাংশ, ডায়াবেটিস মেলাইটাস পাঁচ দশমিক আট শতাংশ।
সেমিনারে হৃদরোগ প্রতিরোধের বিষয়ে বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্য সম্মত সুষম খাবার, ধূমপান পরিহার করণ, ও প্রাত্যহিক শারীরিক ব্যায়াম হার্ট ভাল রাখে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা দৃঢ় করার জন্য সুস্বাস্থ্যের বিকল্প নেই । কারণ ব্যক্তি নিজে সুস্থ থাকলে দেশ ভালো থাকবে। যদি কোনো ব্যক্তি একদিন অসুস্থ থাকেন, তিনি অফিস করতে পারবেন না। তার অসুস্থার কারণে অনেক কাজ বাকি থাকবে। ব্যক্তির কাজ সম্পন্ন করতে না পারলে দেশের উন্নয়ন ব্যহত হয়। সুতরাং সুস্থ থাকা সকলের প্রয়োজন। সুস্থ থাকার জন্য সচেতনতার বিকল্প নেই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউজিসি অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী বলেন, হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শ্রেণিভেদ নেই। যে কোনো শ্রেণির ব্যক্তিরা হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই এ রোগ সম্পর্কে চিকিৎসকদের নিজ ঘর থেকেই সচেতন হতে হবে। কারণ আমাদের কাছে অনেক চিকিৎসকের পরিবারের সদস্য হৃদরোগের সমস্যা নিয়ে আসেন। তাদের অধিকাংশ হৃদরোগ সচেতন নয়। সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে হৃদরোগ সচেতন হতে হবে।
বিএসএমএমইউ’র হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন হৃদরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোস্তাহিরুল হক।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল, অধ্যাপক ডা. মঞ্জুর মাহমুদ , পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রি. জে. ডা. নজরুল ইসলাম খান, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক ব্রি. জে. ডা. আব্দুল্লাহ আল হারুন, মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়ক সহযোগী অধ্যাপক ডা. এস এম ইয়ার ই মাহাবুবসহ হৃদরোগ বিভাগের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
-
৩১ অক্টোবর, ২০২২
-
০২ অক্টোবর, ২০২২
বিশ্ব হার্ট দিবস উদযাপন
ইউনাইটেড কার্ডিয়াক সেন্টারে বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা সাশ্রয়ী করার উদ্যোগ
-
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২
-
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০
-
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০