উচ্চশব্দ শিশু, গর্ভবতী মা ও হৃদরোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর
মেডিভয়েস রিপোর্ট: শব্দ দূষণের ফলে বধিরতাসহ প্রায় ৩০ ধরনের শারীরিক সমস্যা হয় বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) সকালে সিলেটে জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে পবিবেশ অধিদফতর আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
ইকিউএমএস কনসাল্টিং লিমিটেড এবং বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) সহযোগিতায় কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, জলযানের কারণে নদী ও সমুদ্র এলাকায় বিশেষ করে হাওর এলাকায় যেন উচ্চ শব্দ ব্যবহৃত না হয়, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কারণ, শব্দ দূষণের ফলে বধিরতাসহ প্রায় ৩০ ধরনের শারীরিক সমস্যা হয়। এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত পেশাজীবী, পরিবহন চালক, শ্রমিক ও সাধারণ জনগণকে হাইড্রোলিক হর্ন ও অহেতুক হর্ন না বাজানোর ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো রাত ১০টার মধ্যে সীমিত করতে হবে, আতশবাজির অত্যাধিক ব্যবহারের ব্যাপারে সকলকে নিরুৎসাহিত করতে হবে। শব্দ দূষণ প্রতিরোধে উচ্চস্বরে গান বাজানো ও ডিজে পার্টির আয়োজন করা থেকে সরে আসার আহ্বানও জানান মন্ত্রী।
ক্যাপসের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদারের সঞ্চালনায় ও সিলেট বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. মোশারফ হোসেনে সভাপতিত্বে কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. মজুমদার।
তিনি বলেন, ‘ঢাকাসহ প্রতিটি জেলায় শব্দ দূষণের উৎস এবং শব্দের যে তীব্রতা একই ধরনের। পার্থক্য শুধু শব্দের স্থিতি সময়। ঢাকা শহরের শব্দ দূষণের স্থিতিকাল ১২-১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত হয়ে থাকে। জেলা শহরগুলোতে এটি সাধারণত ৬-১০ ঘণ্টা হয়ে থাকে।’
সিলেট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘পৃথিবীতে টিকে থাকার জন্য আমাদের পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বিশ্বে বাংলাদেশ সবচেয়ে কম কার্বন নির্গমন করে থাকে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শব্দ দূষণের ক্ষেত্রে আমাদের ভূমিকা কম নয়।’
তিনি বলেন, ‘সিলেটের কদমতলী থেকে বিয়ানীবাজার পর্যন্ত প্রধান প্রধান সড়কের সারা রাত ধরে বাস ট্রাক চলে, এ সময়ে উচ্চ মাত্রার হর্ন দেওয়া অযৌক্তিক।
কান নাক গলা বিশেষজ্ঞ অধ্যপক ডা. ফয়েজ উদ্দিন বলেন, উচ্চ শব্দ শিশু, গর্ভবতী মা এবং হৃদরোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর, এটি শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করছে। উচ্চ শব্দের কারণে বিশেষত শিশুদের কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। আকস্মিক উচ্চ শব্দ মানবদেহে রক্তচাপ ও হৃদকম্পন বাড়িয়ে দেয় এবং মাংসপেশীর সংকোচন ও পরিপাকে বিঘ্ন ঘটায়।
কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন সিলেট রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি নাবিলা জাফরিন, জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন ও সিলেট ট্রাফিক বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার ফয়সাল মাহমুদ প্রমূখ।