০৪ অক্টোবর, ২০২২ ০৯:৪৭ পিএম

নভেম্বরেই ২য় প্রফ আয়োজনের দাবি ২০১৮-১৯ সেশনের সাপ্লি শিক্ষার্থীদের

নভেম্বরেই ২য় প্রফ আয়োজনের দাবি ২০১৮-১৯ সেশনের সাপ্লি শিক্ষার্থীদের
দ্বিতীয় প্রফ পরীক্ষা নভেম্বরে আয়োজনের দাবি জানিয়ে তারা বলেছেন, জানুয়ারিতে পরীক্ষায় বসলে তাদের শিক্ষা জীবন থেকে এক বছর ক্ষতি হয়ে যাবে। জটিলতা তৈরি হবে পরবর্তী শিক্ষা বর্ষেও।

মেডিভয়েস রিপোর্ট: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজগুলোর এমবিবিএস কোর্সের নভেম্বর ২০২২ এর প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও ফাইনাল প্রফেশনালের পরীক্ষার সম্ভাব্য সময়সূচি প্রকাশিত হয়েছে। ঢাবি ডিন স্বাক্ষরিত ওই সূচি অনুযায়ী, প্রথম, তৃতীয় ও ফাইনাল প্রফ নভেম্বর শুরু হওয়ার কথা রয়েছে, তবে দ্বিতীয় প্রফ শুরু হবে জানুয়ারিতে। এ প্রফের সঙ্গে ২০১৮-১৯ সেশনের সেকেন্ড প্রফ সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার্থীদের বসার কথা রয়েছে। তাই দ্বিতীয় প্রফ পরীক্ষা নভেম্বরে আয়োজনের দাবি জানিয়ে তারা বলেছেন, জানুয়ারিতে পরীক্ষায় বসলে তাদের শিক্ষা জীবন এক বছর ক্ষতি হয়ে যাবে। জটিলতা তৈরি হবে পরবর্তী শিক্ষা বর্ষেও।

২০১৮-১৯ সেশনের একাধিক সাপ্লিমেন্টারি শিক্ষার্থী মেডিভয়েসকে বলেন, ‘কারিকুলাম অনুযায়ী অন্যান্য ব্যাচের মতো সেকেন্ড প্রফ পরীক্ষাও নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী প্রত্যেক সেশনের পরীক্ষা নভেম্বরে হলেও ২য় প্রফেশনাল পরীক্ষা হবে জানুয়ারি মাসে। এতে ২০১৮-১৯ সেশনের ২য় প্রফেশনাল পরীক্ষার সকল সাপ্লিমেন্টারি শিক্ষার্থীদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে।’

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ‘জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ২০১৯-২০ সেশনের নিয়মিত দ্বিতীয় প্রফ পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যদি আমরা অংশগ্রহণ করি, তাহলে বিলম্বে ফলাফল প্রকাশসহ নানা জটিলতায় পরবর্তীতে তৃতীয় প্রফে আমরা আমাদের ব্যাচের সঙ্গে বসা সম্ভব হবে না। ২০১৮-১৯ ব্যাচ থেকে বিছিন্ন হয়ে যাবো। কোনোভাবেই নিজের ব্যাচের সঙ্গে পরীক্ষা দিতে পারবো না, যা আমাদেরকে মানসিকভাবে চরম বিপর্যস্ত করবে।’

তারা বলেন, ‘যারা এর আগে পরীক্ষায় বসতে পারেনি, তারা ছয় মাস পিছিয়ে আছে। এখন যদি জানুয়ারিতে জুনিয়রদের সঙ্গে প্রফে বসতে হয়, তাহলে নভেম্বরে ১৮-১৯ সেশনের সাপ্লি ব্যাচের সঙ্গে বসতে পারবে না। তখন তারা জুনিয়র ব্যাচের সঙ্গে চলে যাবে। এ ছাড়া ১৮-১৯ সেশনে যারা মে, ২০২৩ সালে রেগুলার প্রফে বসছে, তারা যদি জানুয়ারিতে প্রফ দেয়, তাহলে রেজাল্ট আসার আগ পর্যন্ত পরবর্তী ফেইজের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে না।’

‘এই সিদ্ধান্তটি শুধু রেগুলার পেশাগত পরীক্ষায় সাপ্লি আসা শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, বরং যারা মে, ২০২২ দ্বিতীয় পেশাগত পরীক্ষায় দুর্ভাগ্যবশত অংশগ্রহণ করতে পারেনি, তাদেরও অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে’, যোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

তারা বলছেন, ‘সবগুলো সাপ্লিমেন্টারি নিবে নভেম্বরে। শুধু আমাদের সেকেন্ড প্রফের সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা জানুয়ারিতে ২০১৯-২০২০ সেশনের নিয়মিত ব্যাচের সঙ্গে নেওয়া হবে। এমনিতেই করোনায় সেশন জটে এক বছর এরই মধ্যে হারিয়ে গেছে। ২০২১ সালের মে মাসের পরীক্ষা ২০২২ সালের মে মাসে দিয়েছি। এখন নভেম্বরে না নিয়ে জানুয়ারিতে পরীক্ষা নিলে আরও এক বছর পিছিয়ে যাবো।’

এদিকে বেসরকারি মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘সময় যত বেশি লাগবে তাঁদের তত বেশি টাকা গুণতে হবে। মেডিকেলে প্রতি মাসে প্রায় ১০ হাজার করে লাগে। বাবা অনেক কষ্ট করে খরচ চালাচ্ছেন। তার ওপর অতিরিক্ত সময় লাগলে খরচ বহন করতে কষ্ট হয়ে যাবে।’

তাদের তথ্য অনুযায়ী, ঢাবি অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজগুলোর প্রায় হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থী পরীক্ষা নিয়ে হতাশায় ভুগছেন। শিক্ষা জীবনে যেন এক বছর পিছিয়ে না যায়, এজন্য নভেম্বরেই পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ২য় প্রফের সাপ্লিমেন্টারি শিক্ষার্থীরা।

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটির চেয়ারম্যান ডা. শাহরিয়ার নবী মেডিভয়েসকে বলেন, ‘তাদের অনেকে সাপ্লিমেন্টারির সাপ্লি ব্যাচ, শুধু সাপ্লি না। ওদেরকে বলা হয়েছে, তাদের পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হবে। এখন পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার কারণে পরবর্তী মে মাসের পরীক্ষা জুনে হবে। তাহলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। এমনটি হলে তারা নিয়মিত ব্যাচ ধরতে পারবে। তাদের নভেম্বরের পরীক্ষাটাই জানুয়ারিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দুই মাস পিছিয়ে যাচ্ছে। ওরা যখন মে মাসে থার্ড প্রফ দেবে, তখনও তাদের পরীক্ষা দুই মাস পিছিয়ে দেওয়া হবে। সুতরাং অবস্থা তো একই হচ্ছে। নানা সমস্যার কারণে এখনকার পরীক্ষা জানুয়ারিতে হচ্ছে বলেই তো তাদের মে মাসের পরীক্ষা জুনে নিয়ে যাওয়া হবে। তাদের দুই মাসের যে ব্যবধান, এটা থাকবে। এটা তো আগেও থাকবে পরেও থাকবে। ওরা যদি মনে করে, জানুয়ারিতে পরীক্ষা হলে ফলাফল পেতে পেতে সেই মার্চ-এপ্রিল লেগে যাবে, তাহলে মে মাসে তো তাদের পরীক্ষা হচ্ছে না। এ পরীক্ষাই তো জুনে হবে। তাহলে তো সমস্যা থাকছে না।’ 

ইচ্ছা থাকলেও এক সেশনের পরীক্ষা এভাবে নেওয়া সম্ভব নয় জানিয়ে ঢাবি ডিন বলেন, এ নিয়ে পরবর্তীতে অধিভুক্ত কলেজগুলোর অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আরও আলোচনায় বসবেন তারা।

নভেম্বরে পরীক্ষায় বসতে না পারলে শিক্ষার্থীদেরকে বাড়তি ফি গুণতে হবে, বিষয়টি তুলে ধরলে তিনি বলেন, ‘যারা নিয়মিত পাস করে যাবে, তারা ৬০ মাসের সুবিধা ভোগ করবে। অনিয়মিতরা এ সুবিধা পাবে না। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেউ বছরের পর বছর ফেল করলে কিভাবে সেই সুযোগ পাবে?’ 

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত