সকল বিষয়ে অনার্স মার্ক পেয়ে ঢাবির তৃতীয় প্রফে ৪র্থ জামালপুর মেডিকেলের ফানজিয়া
কোনো বাধার কাছে দমে না গিয়ে পড়াশোনায় বেশি মনোযোগী হতে হবে। নিজের ইচ্ছাশক্তি, পরিবারের অনুপ্রেরণা, শিক্ষক ও বন্ধুদের উৎসাহ একটি ভালো ফলাফলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিজ্ঞান মানুষকে গতি দিলেও মানুষের জীবনে আগের চেয়ে বিষণ্ণতা ও হতাশার পরিমাণ বেড়েছে বহুগুণ। তবে সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রেখে ধৈর্য ধারণ করতে পারলে সাফল্যের মালা নিশ্চিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজগুলোর এমবিবিএস তৃতীয় প্রফেশনাল পরীক্ষায় তিন বিষয়ে অনার্স মার্কসহ চতুর্থ স্থান অর্জন করেছেন এস ফানজিয়া জামান। এর আগের প্রফেও অনার্স মার্ক পেয়েছেন জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের চতুর্থ ব্যাচের এ মেধাবী শিক্ষার্থী। ভবিষ্যতে ইন্টারনাল মেডিসিন নিয়ে পড়ার ইচ্ছা রয়েছে তার।
প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায় ফানজিয়া জামান ফার্মাকোলজি, প্যাথোলজি ও মাইক্রোবায়োলজিতে অনার্স মার্ক পেয়েছেন। শিক্ষা জীবনে ধারাবাহিকভাবেই মেধা তালিকায় স্বাক্ষর রেখে আসছেন তিনি।
গাইবান্ধা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও গাইবান্ধা সরকারি কলেজ থেকে ২০১৭ সালে এইচএসসি পাস করেছেন এ মেধাবী শিক্ষার্থী। পরবর্তীতে ২০১৭-১৮ সেশনে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন।
কৃতি শিক্ষার্থী এস ফানজিয়া জামানের সঙ্গে কথা হয় মেডিভয়েসের। আলাপচারিতায় উঠে আসে তার পড়াশোনা, বিচিত্র অভিজ্ঞতা, সফলতার পেছনের গল্প ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।
অনুভূতি
অনুভূতি প্রকাশের ভাষা নেই জানিয়ে ফানজিয়া জামান বলেন, আমার খুব ভালো লাগছে। আমি এর আগের প্রফেও ফরেনসিক মেডিসিনে অনার্স মার্ক পেয়েছি। ধারাবাহিকভাবে ভালো করতে পারছি, এজন্য সকল প্রশংসা আল্লাহর প্রতি। যা পেয়েছি, আসলে এতোটা আশাও করিনি।
অনুপ্রেরণা
পরিবারের অনুপ্রেরণায় ভালো করছেন জানিয়ে এ মেধাবী শিক্ষার্থী বলেন, পরিবারের দিকে তাকালেই বুঝতে পারি, আমাকে বহুদূর যেতে হবে। নিজের এবং পরিবারের জন্য কিছু একটা করতে হবে। আমার শিক্ষক ও ব্যাচমেটরা নানাভাবে আমাকে সহযোগিতা করেছে। তাদের ভালোবাসা পেয়েছি অনেক।
ধৈর্যধারণে ভালো ফল আসে
শুধু মেডিকেল শিক্ষার্থীরা নয়, বরং সাধারণ মানুষও হতাশায় ভুগেন উল্লেখ করে ফানজিয়া জামান বলেন, সাধারণ মানুষও জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন কারণে হীনমন্যতায় ভুগেন; একাকিত্ব হয়ে পড়েন। এ সময় সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রেখে ধৈর্য্য ধারণ করতে পারলে কঠিন সময় সহজে পার হয়ে যায়।
মুখস্থ করা দোষের কিছু না
ফানজিয়া জামান বলেন, একেকজন শিক্ষার্থীর পড়ার ধরন একেক রকম। কারো একবার পড়ে মনে থাকে, কারো একই জিনিস দশবার পড়তে হয়। বারবার পড়ে মুখস্থ করে আত্মস্থ করা দোষের কিছু নয়।
পরীক্ষার ফাঁকে গুরুত্বপূর্ণ টপিকস পড়া
প্রতিদিনের পড়াশোনা প্রতিদিন শেষ করতে পারলে, পরীক্ষার প্রস্তুতি অনেকটা সহজ হয়ে যায়। তারপর পরীক্ষার ফাঁকে ফাঁকে গুরুত্বপূর্ণ টপিকস, স্যারদের লেকচার শোনা ও নোটগুলো একটু দেখা। তাহলে পরীক্ষায় ভালো করা সম্ভব বলে জানান ফানজিয়া জামান।
সিজিপিএ বাতিল ও ক্যারিঅন বহাল থাকুক
মেডিকেলের পরীক্ষাতো ভার্সিটির পরীক্ষার মতো নয়। এখানে লিখিত, ভাইভা, প্র্যাকটিকেল, বেড সাইড ক্ল্যানিক্যাল পরীক্ষা সবকিছুর উপর নাম্বারিং হয়। সব সময় সবদিকে সমানভাবে ভালো করা, যে কারো পক্ষেই কষ্টকর। এজন্য সিজিপিএ বাতিল হোক, ক্যারিঅন বহাল থাকুক। একজন শিক্ষার্থী যেনো ইয়ার লস ছাড়াই নিজেকে প্রমাণ করার দ্বিতীয় সুযোগটা পায়, সেটা থাকা তো জরুরি। বিশেষ করে মেডিকেলে এটা আরো বেশি জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
মেডিকেল শিক্ষায় প্যাথোলজিটা প্রথমে হলে ভালো হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এতে ডিজিজ সম্পর্কে সম্যক ধারণা নিয়ে পরবর্তী ইয়ারে ফার্মাকোলজি তথা ড্রাগস নিয়ে পড়লে বেশি ফলপ্রসূ হতো। তবে বড় বড় স্যারগণ বিষয়টি আরো ভালো বুঝবেন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাবি অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজগুলোর এমবিবিএস তৃতীয় প্রফেশনাল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এ পরীক্ষায় পাসের হার ৭৯ দশমিক ৭০ শতাংশ।
এএইচ/এমইউ