ভুয়া চিকিৎসকদের তালিকা তৈরি শুরু, ধরা পড়লেই মামলা: বিডিএফ

আলী হোসাইন: দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ভুয়া চিকিৎসকের সংখ্যা। প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে প্রকৃত চিকিৎসকদের। একদিকে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা হয়ে পড়ছে প্রশ্নবিদ্ধ, অন্যদিকে ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন অনেক রোগী। এসব ভুয়া চিকিৎসকদের রুখতে এবার মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ ডক্টরস’ ফাউন্ডেশন (বিডিএফ)।
আজ বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) বিডিএফ’র গভর্নিং বডির সদস্য ডা. নিরুপম দাশ মেডিভয়েসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্স না করেই বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) রেজিস্ট্রেশন কোনো মতে যোগাড় করে চিকিৎসা দিচ্ছে ভুয়া চিকিৎসকরা। যাদের কারণে অনেক রোগীকে অকালে প্রাণ হারাতে হয়। তাই এদের প্রতিহত করতে কাজ শুরু করেছি।
ভুয়া চিকিৎসকদের তালিকা প্রকাশ করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছি। এক্ষেত্রে বিডিএফ সদস্য এবং গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে চলছি। কাজ শেষে তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর তারা কিভাবে রেজিস্ট্রেশন পেয়েছে সেটিও দেখা হবে।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কথা জানিয়ে ডা. নিরুপম দাশ বলেন, ‘ভুয়া চিকিৎসার দায়ে সাজা খেটে জেল থেকে বের হয়ে আবারও প্রাক্টিস করছে, এরকম অনেকে আছে। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে আরো সতর্ক হতে হবে। ভুয়া চিকিৎসকরা দেশের বড় শত্রু। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিক রাখা সম্ভব হবে না।’
বিডিএফ’র গভর্নিং বডির এ সদস্য জানান, ‘নামধারী চিকিৎসকদের দ্বারা প্রতারিত হয়ে মানুষ প্রকৃত চিকিৎসকদের গালিগালাজ করছে। কারণ, মানুষতো জানে না-কে ভুয়া, কে আসল। ভুয়া চিকিৎসকদের দায়ভার সবশেষে প্রকৃত চিকিৎসকদের ওপর এসে পড়ছে।’
‘যেখানে ছয়-সাত বছর পড়াশুনা করে এমবিবিএস পাস করতে হয়, সেখানে কেউ পড়াশোনাই না করে, কেউ অস্ত্রোপচার কক্ষের (ওটি) বয় হয়ে চিকিৎসক বনে যান। জালিয়াতির মাধ্যমে কোনোভাবে বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন জোগাড় করতে পারলেই চিকিৎসক। সর্বশেষ উদাহরণ- বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া বাজারের সান্তনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রশাসনের অভিযান ধরা পড়া ভুয়া চিকিৎসক মুনতাকা দিলশান ঝুমা ও গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনায় নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে রোগী দেখা নীরব নাহিয়ান’, যোগ করেন ডা. নিরুপম।
এ রকম হাজারও নীরব নাহিয়ান ও মুনতাকা দিলশান রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের খুঁজে বের করতেই কাজ করছি। যারা ভুয়া চিকিৎসক হিসেবে ধরা পড়বে, তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে। আশা করি, এবার আমাদের কাজের একটি ভালো ফলাফল পাবো।’
এদিকে নিয়ম ভেঙে নামের আগে ডা. লিখলে ও বিএমডিসির নিয়ম না মেনে ডিপ্লোমা প্রাপ্ত চিকিৎসা সহকারী তাদের ব্যবস্থাপত্রে ৬০টির বেশি ওষুধ লিখলে তাদের বিরুদ্ধে তথ্য দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ডক্টরস’ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা. মো. শাহেদ রফি পাভেল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তিনি জানান, ‘বিএমডিসির নিয়ম অনুযায়ী ডিপ্লোমা প্রাপ্ত চিকিৎসা সহকারীরা তাদের ব্যবস্থাপত্রে ৬০টি ওষুধ লিখেতে পারবে। এটি বিএমডিসির ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। যারা এই নিয়ম মানেন না, তাদের কোন ব্যবস্থাপত্রের ডকুমেন্ট হাতে আসলে বিডিএফ’কে জানাবেন।’
স্বাস্থ্য প্রশাসন এ বিষয়ে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও যারা নিয়ম মানবে না তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণ করবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বিএমডিসি আইনের ২৯(১) ধারা অনুযায়ী ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিধারীরা ব্যতীত অন্য কেউ তাদের নামের পূর্বে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না। কোন ব্যক্তি এই ধারা লঙ্ঘন করলে উক্ত লঙ্ঘন হবে একটি অপরাধ এবং তার জন্য তিনি ৩ বছর কারাদণ্ড বা ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং উক্ত অপরাধ অব্যাহত থাকলে প্রত্যেকবার তার পুনরাবৃত্তির জন্য অন্যূন ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের অতিরিক্ত হিসেবে দণ্ডনীয় হবেন।
-
২৩ মে, ২০২৩
-
০৬ মে, ২০২৩
-
০৭ ডিসেম্বর, ২০২২
-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২২
-
০৫ অক্টোবর, ২০২২
-
১২ অগাস্ট, ২০২২
ভুয়া চিকিৎসক ও নিবন্ধনহীন
কামরাঙ্গীরচরের রিভার সাইড মেডিকেল বন্ধের নির্দেশ
-
০৪ অগাস্ট, ২০২২
