নীরব ঘাতক উচ্চ রক্তচাপ: নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুতি কতটুকু

মেডিভয়েস রিপোর্ট: বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান স্বাস্থ্য সমস্যা হলো হৃদরোগ, ক্যান্সার, কিডনিরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের মতো বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এনসিডি কান্ট্রি প্রোফাইল ২০১৮ অনুসারে, বাংলাদেশে প্রতি বছর মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশের পেছনে দায়ী নানা অসংক্রামক রোগ। দিন দিন এসব রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
বিশ্ব উচ্চরক্তচাপ দিবস ২০২২ উপলক্ষে আজ সোমবার (১৬ মে) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা জানানো হয়।
বাংলাদেশে বর্তমানে উচ্চ রক্তচাপ থুবই সাধারণ রোগ হিসেবে দেখা দিয়েছে। এনসিডি রিস্ক ফ্যাক্টর সার্ভে (স্টেপস ২০১৮) অনুসারে, দেশে প্রতি পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে একজন (২১%) উচ্চ রক্তচাপে (সিস্টোলিক ব্লাড প্রেশার ১৪০ মিমি মার্কারি) আক্রান্ত। এর বাইরে এখনো বিপুল সংখ্যক মানুষ তাদের রক্তচাপ জানেন না। হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনি রোগ, পক্ষাঘাত, অন্ধত্বসহ নানাবিধ জটিল অসুখের জন্য উচ্চ রক্তচাপ একটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান।
উচ্চ রক্তচাপকে নীরব ঘাতক বলা হয়। কারণ, এই রোগের কোনো দৃশ্যমান লক্ষণ থাকে না। ফলে কারো উচ্চ রক্তচাপ থাকলেও, পরিমাপ না করলে তার পক্ষে জানা সম্ভব নয় যে, তিনি এই রোগে আক্রান্ত। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভালো কৌশল হচ্ছে রক্তচাপ নির্ণয় করা। যদি দেখা যায়, তার রক্তচাপ বেশি, তখন জীবনাচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে ও নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করতে সবার উচিত স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা মেনে চলা।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সরকার নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত প্যানেল উচ্চ রক্তচাপ চিকিৎসার জন্য একটি জাতীয় প্রটোকল এবং একাধিক ওষুধের সমন্বয়ে একটি কার্যকরী ডোজ নির্ধারণ করেন। এই প্রটোকল অনুসারে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় দেশের ২০০টি উপজেলা হাসপাতালের এলসিডি কর্নার থেকে বিনামূল্যে উচ্চ প্রক্তচাপের ওষুধ বিতরণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৮০টি উপজেলায় ওষুধ বিতরণের পাশাপাশি ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে রোগীদের তথ্য সংগ্রহ, নিবন্ধন ও ফলোআপ করা হচ্ছে।
সিলেট বিভাগ, কিশোরগঞ্জ ও জামালপুর জেলার ৫৪টি উপজেলায় রোগীদের স্ক্রিনিং, নিবন্ধন, ফলোআপ ও ওষুধ বিতরণের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ। এই উপজেলাগুলোয় এখন পর্যন্ত সাত লাখ ২৬ হাজার ৯০০ মানুষের স্ক্রিনিং করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯১ হাজার ৬৯১ জনের উচ্চ রক্তচাপ শনাক্ত ও নিবন্ধন করা হয়েছে। এই নিবন্ধিত রোগীদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের হার ৫৭ শতাংশ, যা আমাদের জাতীয় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের হার এর চেয়ে বেশি।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের আওতাভুক্ত ৫৪ উপজেলায় রোগীদের নিবন্ধন থেকে শুরু করে ওষুধ বিতরণ, এমনকি কোথায় কী পরিমাণ ওষুধ প্রয়োজন? সবগুলো বিষয়ই ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়। এজন্য বেশকিছু অ্যাপ তৈরি ও ব্যবহার করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে ২০০ উপজেলাতেই ডিজিটাল প্রযুক্তির এই ব্যবহার বিস্তৃত করা হবে। এর মাধ্যমে আরো বহু সংখ্যক রোগী সরাসরি উপকৃত হবেন।

কমিউনিটি ক্লিনিকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির অনুষ্ঠানে ডা. মোদাচ্ছের
কমিউনিটি ক্লিনিক: বঙ্গবন্ধুর দর্শনই প্রধানমন্ত্রীর হাতে বাস্তবায়ন
কমিউনিটি ক্লিনিকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির অনুষ্ঠানে ডা. মোদাচ্ছের
কমিউনিটি ক্লিনিক: বঙ্গবন্ধুর দর্শনই প্রধানমন্ত্রীর হাতে বাস্তবায়ন
কমিউনিটি ক্লিনিকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির অনুষ্ঠানে ডা. মোদাচ্ছের
কমিউনিটি ক্লিনিক: বঙ্গবন্ধুর দর্শনই প্রধানমন্ত্রীর হাতে বাস্তবায়ন
