মেডিকেলে ভর্তি: প্রকাশ করা হবে না অপেক্ষমাণ তালিকা

মেডিভয়েস রিপোর্ট: ২০২১-২২ সেশনের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে অপেক্ষমাণ তালিকা না থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন পরীক্ষার্থীরা। তারা বলেছেন, প্রতি বছর এ তালিকা থাকলেও এ বছর এখনো তা করা হয়নি। এতে অনেক শিক্ষার্থী সীমাহীন উদ্বেগের মধ্যে আছেন।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, জাতীয় মেধাক্রম অনুসারে যতটি আসন ফাঁকা থাকবে তত আসনে অপেক্ষাকৃত বেশি স্কোরধারীদের ডাকা হবে হবে। ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে আলাদা করে কোনো তালিকা প্রকাশ করা হবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পরীক্ষার্থী মেডিভয়েসকে বলেন, ‘গত ৫ এপ্রিল ২০২১-২২ সেশনের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল দেওয়া হলেও ওয়েটিং লিস্ট সম্পর্কে এখনো কিছু বলা হচ্ছে না। গত বছর ভর্তি পরীক্ষায় যারা ওয়েটিংয়ে ছিলেন তাদের রেজাল্টের পাশে ওয়েটিং লেখা ছিল। কিন্তু এ বছর আমাদের কারো রেজাল্টে ওয়েটিং লেখা নাই। এমতাবস্থায় আমরা যারা খুব সামান্য কিছু নম্বরের কারণে চান্স পাইনি, তারা খুবই হতাশার মধ্যে আছি। বিশেষ করে আমরা যারা সেকেন্ড টাইমার এবং এখনো কোথাও ভর্তি হইনি, তাদের হতাশা আরো বেশি।’
অপেক্ষমাণ তালিকা প্রকাশকে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে একটি ঐতিহ্য উল্লেখ করে আরও এক শিক্ষার্থী বলেন, এটা না দিলে কে কোন পর্যায়ে আছে, তা বোঝা যায় না। অনেকে মানসিকভাবে অসহায়ত্বে ভোগছেন। হতাশা দূর করাই যেখানে কাম্য, সেখানে হতাশা সৃষ্টি করা মোটেও গ্রহণযোগ্য না।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন মেডিভয়েসকে বলেন, এমনটি তো দরকার নেই। ক্রমিক নম্বর তো দিয়েই দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের কাছে নম্বর চলে গেছে, তারা জানতে পারবেন ক্রমিক নম্বর কত? ধরেন, আমরা নিয়েছি, চার হাজার ৭০০ জনকে। তাদের মধ্যে যে এক নম্বর, ভর্তির ক্ষেত্রে সে অগ্রগণ্য। এভাবে ওই তালিকার সবার ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। একজন ফাঁকা হলেই তালিকার বাইরে যারা স্কোরে আগানো তাদের ডাকা হবে। এ তালিকার সকলেই যদি ভর্তি না হয়, তাহলে পরের আট হাজার পর্যন্ত ডাকা হবে। সুতরাং আলাদা করে অপেক্ষমাণ তালিকার দরকার নেই।
অন্যান্য সময় এমন একটি তালিকা ছিল, প্রসঙ্গটি তুললে তিনি বলেন, ‘ছিল, কিন্তু এটি অপ্রয়োজনীয়। এ নিয়ে আলোচনারও প্রয়োজন নেই। আমরা নম্বর দিয়ে দিয়েছি। সিট ফাঁকা হবে, সেই অনুযায়ী পরের শিক্ষার্থী ডাক পাবে। ওয়েইটিং লিস্টে থাকলেই কি সে ভর্তির সুযোগ পেয়ে যেতো? বিষয়টি তো পরিষ্কার, প্রকাশিত ফলাফলের তালিকা দেখেই সে নিজের অবস্থান অনায়াসে বুঝতে পারে। মেধা তালিকা তো প্রকাশিত হয়েছে। এটা না থাকলে কথা উঠা স্বাভাবিক ছিল যে, কারা পরবর্তীতে ভর্তির সুযোগ পাবে?’
পরীক্ষা সুন্দরভাবে সম্পন্ন হওয়ায় আলোচনার বিষয় না পেয়ে এ নিয়ে বিতর্ক তৈরির চেষ্টা চলছে বলেও মন্তব্য করেন স্বাস্থ্য শিক্ষার ডিজি।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. এ কে এম আহসান হাবীব মেডিভয়েসকে বলেন, ‘আলাদা করে কোনো তালিকা প্রকাশ করা হবে না। ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ বছর তা করা হয়নি। জাতীয় মেধাক্রম অনুসারে যে কয়টা সিট ফাঁকা হবে, সেখানে অপেক্ষাকৃত বেশি স্কোরধারীকে টেনে নেওয়া হবে। আগামী ১৮ মে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। এর পর যে কয়টি আসন ফাঁকা থাকবে, সেই অনুযায়ী পরেরগুলোতে কল করা হবে।’
অপেক্ষমাণ তালিকা না থাকাকে কেন্দ্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে—এমনটি জানালে তিনি বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত এটা হয় তো আমাদের দেওয়াই লাগতে পারে। এতো বড় একটি কাজ এতো সফলভাবে সম্পন্ন করার পর ছোট্ট একটি জায়গায় বিতর্কের অবকাশ দেওয়া ঠিক হবে না। কারণ প্রতিটি বিষয়ই যে সবাই বুঝবে তাও না। তাই সবার কাছে পরিষ্কার রাখতেই এমনটি (অপেক্ষমাণ তালিকা) থাকা দরকার।’
গত ৫ এপ্রিল ২০২১-২২ সেশনের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে পাস করেন ৭৯ হাজার ৩৩৭ জন। পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৫৫ দশমিক ১৩ শতাংশ।
এর মধ্যে পাস করা ছেলের সংখ্যা ৩৪,৮৩৩ জন (৪৩.৯১%) এবং মেয়ের সংখ্যা ৪৪.৫০৪ জন (৫৬.০৯%)।
সরকারি মেডিকেল কলেজে সুযোগপ্রাপ্ত ছেলের সংখ্যা ১৮৮৫ জন (৪৪.৫৬%), মেয়ে ২৩৪৫ জন (৫৫.৪৪%)।
এ বছর মেধাতালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন সুমাইয়া মোসলেম মিম। ভর্তি পরীক্ষায় তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৯২.৫। তিনি খুলনা মেডিকে কলেজ কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন।
অন্যদিকে লিখিত পরীক্ষায় ছেলেদের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর স্কোর ৯১.৫।
এর আগে গত এক এপ্রিল সকালে সারাদেশে একযোগে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশের ১৯টি কেন্দ্রের ৫৭টি ভেন্যুতে পরীক্ষায় অংশ নেয় এক লাখ ৪৩ হাজার ৯১৫ জন শিক্ষার্থী, যা মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ইতিহাসে সর্বাধিক।
-
১৩ মার্চ, ২০২৩
-
১২ মার্চ, ২০২৩
-
১২ মার্চ, ২০২৩
এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা
জাতীয় মেধায় প্রথম রাফসান নিওরোলজিস্ট হতে চান
-
১২ মার্চ, ২০২৩
-
১২ মার্চ, ২০২৩
-
১২ মার্চ, ২০২৩
-
১১ মার্চ, ২০২৩
-
১০ মার্চ, ২০২৩