০৫ এপ্রিল, ২০২২ ০৩:৪০ পিএম

‘এতো বড় সাফল্যের প্রত্যাশী ছিলাম না’

‘এতো বড় সাফল্যের প্রত্যাশী ছিলাম না’
মিম বলেন, ‘এতো বড় সাফল্যের জন্য আমি প্রত্যাশী ছিলাম না। এটা একেবারেই প্রত্যাশার বাইরে।’ ছবি: সংগৃহীত

মো. মনির উদ্দিন: ২০২১-২২ সেশনের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধায় প্রথম হয়েছেন সুমাইয়া মোসলেম মিম। আজ মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে ফলাফল প্রকাশের পর মেডিভয়েসের সঙ্গে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, আকাশচুম্বি এ ফলাফলের জন্য তিনি প্রত্যাশী ছিলেন না।

মিম বলেন, ‘এতো বড় সাফল্যের জন্য আমি প্রত্যাশী ছিলাম না। এটা একেবারেই প্রত্যাশার বাইরে।’

কাদের ভূমিকায় এই অবস্থানে আসা—জানতে চাইলে সুমাইয়া মোসলেম মিম বলেন, ‘এই অবস্থানে আসার পেছনে আমার আব্বু-আম্মুর সীমাহীন ভূমিকা রয়েছে। আমাদের গ্রামের বাসা খুলনা শহরে না। ফলে আমার পড়াশোনার স্বার্থে তাদের এখানে অবস্থান করতে হতো। সরকারি চাকরিজীবী হওয়ায় দুইজনকেই এতো দূর থেকে ভিন্ন উপজেলায় গিয়ে চাকরি করতে হয়। আমার জন্য এই দুই বছর তাদের অবর্ণনীয় কষ্ট করতে হয়েছে। আব্বুকে ডুমুরিয়া এবং আম্মুকে কেশবপুরে যেতে হয়। আম্মুর পক্ষে এতো দূর যাওয়া খুবই কষ্টকর ছিল। তবুও আমার জন্য হাসিমুখে এসব করেছে। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণেই আমার এ অর্জন। আজকে তাদের যে হাসিমুখটা দেখতে পাচ্ছি, এর চেয়ে ভালো লাগার আর কিছু নেই।’

মায়ের প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যেই ডাক্তারি পড়ায় মনোযোগী হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ডাক্তার হওয়ার বিষয়ে ছোটবেলা থেকে কোনো ইচ্ছা ছিল না। বলা চলে, শুধুমাত্র আম্মুর জন্য এখানে আসা। খুব ভালোভাবে আসতে পারা, নিঃসন্দেহে একটি ভালো লাগার।’

‘একই সঙ্গে কোচিংয়ের শিক্ষকদের কথা অবশ্যই স্মরণ করবো। আর ছোটবেলা থেকেই আমার প্রতি শিক্ষকদের অনেক অবদান ছিল। পঞ্চম শ্রেণী থেকে এ পর্যন্ত আসতে সব সময় আমার ব্যাপারে তারা অনেক সহযোগী মনোভাবাপন্ন ছিলেন’, যোগ করেন মিম।

মেডিকেলে পড়াশোনায় আগ্রহীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বুঝে বুঝে পড়াশোন করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নাই। স্বচ্ছ একটি ধারণা থাকতে হবে। মেডিকেলের অনেক কিছুই মুখস্ত করতে হয়, কিন্তু এর চেয়ে এখানে বেশি জরুরি হলো, বুঝে পড়া। তা না হলে আজকের বিষয়টি আগামীকাল মনে থাকবে না।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রথম চাওয়া হলো, একজন ভালো ডাক্তার হওয়া। সেই সঙ্গে একজন ভালো মানুষ হওয়া, যাতে মানুষের সেবা করতে পারি। কারণ চিকিৎসা সেবামূলক পেশা। চিকিৎসকদের ব্যাপারে যে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে, সেখান থেকে খানিকটা বের করে আনার চেষ্টা চলবে।’

মিম খুলনা মেডিকেল কলেজ কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। ভর্তি পরীক্ষায় তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৯২.৫ এবং মোট নম্বর ২৯২.৫।

তার পিতা মোসলেম উদ্দিন সরদার ডুমুরিয়া কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। মা খাদিজা খাতুনও একজন সরকারি চাকরিজীবী। তিনি কেশবপুর উপজেলার পাজিয়া উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট পদে কর্মরত রয়েছেন।

মিমের জন্ম ২০০৪ সালের ১১ অক্টোবর খুলনার ডুমুরিয়ায়।

আশৈশব তুখোর মেধাবী মিম পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষা ও জেএসসি পরীক্ষায় উপজেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। 

তিনি খুলনার ডুমুরিয়া গার্লস স্কুল থেকে ২০১৯ সালে এসএসসি এবং সরকারি এম এম সিটি কলেজ থেকে ২০২১ সালে এইচএসসি সম্পন্ন করেন। অতীতের ধারাবাহিকতায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায়ও মেধার স্বাক্ষর রাখেন তিনি। গুরুত্বপূর্ণ এই দুই পরীক্ষাতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পান তিনি।

এ বছর এক লাখ ৪৩ হাজার ৯১৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছেন ৭৯ হাজার ৩৩৭ জন। পাসের হার ৫৫ দশমিক ১৩ শতাংশ।

এর মধ্যে পাস করা ছেলের সংখ্যা ৩৪,৮৩৩ জন (৪৩.৯১%) এবং মেয়ের সংখ্যা ৪৪.৫০৪ জন (৫৬.০৯%)। পরীক্ষায় ছেলেদের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর স্কোর ৯১.৫।

সরকারি মেডিকেল কলেজে সুযোগপ্রাপ্ত ছেলের সংখ্যা ১৮৮৫ জন (৪৪.৫৬%), মেয়ে ২৩৪৫ জন (৫৫.৪৪%)।

এর আগে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদল স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হাতে ফলাফল হস্তান্তর করেন।

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
বিএসএমএমইউ অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের পুনর্মিলনীতে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন

‘মানুষ জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি চিকিৎসকদের কাছে ঋণী’

বিএসএমএমইউ অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের পুনর্মিলনীতে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন

‘মানুষ জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি চিকিৎসকদের কাছে ঋণী’

  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
নম্বরের কথা চিন্তা করে পড়াশোনা করিনি: ডা. জেসি হক
এমআরসিপিতে বিশ্বসেরা বাংলাদেশি চিকিৎসক

নম্বরের কথা চিন্তা করে পড়াশোনা করিনি: ডা. জেসি হক