২০ মার্চ, ২০২২ ০৫:৪০ পিএম

‘বিনিময়ে নয়, দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে চিকিৎসকরা এগিয়ে যাচ্ছেন’

‘বিনিময়ে নয়, দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে চিকিৎসকরা এগিয়ে যাচ্ছেন’
অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।

অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া একজন প্রথিতযশা নিওরোসার্জন। কর্ম জীবনে দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা বিদ্যাপীট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

অদম্য মেধাবী এ চিকিৎসক ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

চিকিৎসা বিদ্যায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০২২ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি জানতে মেডিভয়েস মুখোমুখি হয় কিংবদন্তি এ চিকিৎসকের।

আলাপচারিতায় উঠে আসে তাঁর জীবনের সংগ্রামমুখরতা, ঈর্ষণীয় সাফল্যের গৌরবগাঁথা ও দেশের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন: সাখাওয়াত হোসাইন।

মেডিভয়েস: দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হওয়ার অনুভূতি জানতে চাই? 

অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া: আমার অভিব্যক্তি জানতে আসায় আপনাকে এবং সাংবাদিক বন্ধুদেরকেও আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালিত হচ্ছে। সেই সাথে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী পালিত হচ্ছে। এই মাহেন্দ্রক্ষণে স্বাধীনতা পদক ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে আমার নাম থাকাতে আমি অত্যন্ত আন্দদিত এবং গর্বিত অনুভব করছি। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে পুরস্কার পাওয়াটা অত্যন্ত সৌভাগ্যের ব্যাপার। আমি এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

যেকোনো পুরস্কার হলো কাজের স্বাকৃতি। এটাও আমার কাজের একটা স্বাকৃতি। কাজের স্বীকৃতি যদি দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবে দেশের প্রতি মমত্ববোধ, সেবাদানের আগ্রহ ও দেশাত্মবোধ আরও বেড়ে যায়। যতদিন বেঁচে থাকবো, দেশের সেবায় আরও বেশি মনোনিবেশ করবো। এজন্য জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি এবং ১৫ আগস্টে শহীদদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। সেইসাথে এই স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।

আমাদের কাছে যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি প্রনিধানযোগ্য, সেটি হলো স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখা। সেইসাথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। করোনা মহামারির এই সময়ে আমরা যাদেরকে হারিয়েছি এবং যারা এই যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন, চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যসেবাদানকারী যারা শাহাদাতবরণ করেছেন, সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। এখন পর্যন্ত যেসব কোভিড যোদ্ধা কাজ করে যাচ্ছেন, তাদেরকেও শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আমরা এই দেশের সন্তান। স্বাধীনতার ৫০ বছরের পূর্তি উপলক্ষে দেশের প্রতি যে দায়বদ্ধতা, চিকিৎসক হিসেবে সেটি আমরা বারবার দেখিয়ে যাচ্ছি। কোনো কিছুর বিনিময়ে নয়, দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে চিকিৎসক সমাজ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষের সেবায় এগিয়ে যাচ্ছি।

মেডিভয়েস: মাঠের রাজনীতিতে ছিলেন লড়াকু সৈনিক ও দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা বিদ্যাপীটের ভিসি ছিলেন, আপনার জীবনে সফলতার গল্প জানতে চাই। 

অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া: আমার জীবনে সফলতার কারণ একটা জিনিসই মনে হয়, আমি যে কাজটা করেছি, সেটা অত্যন্ত সততা, নিষ্ঠা ও মনোযোগের সঙ্গে করেছি। সেইসাথে আমার সহকর্মীদের সহযোগিতা এবং আমার শিক্ষকদের যথাযথভাবে শিক্ষাদানও উল্লেখযোগ্য। তা ছাড়া আমার মা-বাবার আর্শীবাদ চিরস্মরণীয়।

মেডিভয়েস: কেউ যদি আপনার মত সফল হতে চায়, তার জন্য কি পরামর্শ দিবেন?

অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া: আমার মত নয়, আমার চেয়ে আরও বড় হোক। প্রথমত কথা হলো, ছাত্রজীবনে ছাত্রত্বের বাইরে কোথাও সময় দেওয়া উচিত নয়। ৭৯ এর গণআন্দোলনের সময় ঢাকা কলেজের ছাত্র ছিলাম। আমরা ঢুকেই দেখি, জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ কামাল ভাই, আমরা তখন ফাস্ট ইয়ারে। কামাল ভাইয়েরা দ্বিতীয় বর্ষে। আমরা প্রথমত একটু কৌতুহলী ছিলাম। তখন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। শেখ কামাল ভাইয়ের মধ্যে স্লোগান দিয়ে একটা মিছিলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্দীপনা দেখেছি। তার মধ্যে দেখেছি, ছাত্রদের মাঝে জাতীয়তাবাদের একটা উন্মেষ ঘটানোর প্রচেষ্টা।

ছাত্রজীবনে আমরা রাজনীতি করেছি। কিন্তু পড়াশোনা কখনও ফাঁকি দেইনি। পড়াশোনা ফাঁকি না দিলে সফল হওয়া যাবেই। চিকিৎসকদের মধ্যে একটা কথা আছে, কেউ যদি নিয়মিত ঢাকা মেডিকেলের করিডোর দিয়েও হাঁটে সে একজন ভালো চিকিৎসক হবে। এর মানে হলো, সে হাসপাতালে গেল, রোগীর খোঁজ-খবর নিলো। রোগীটা কি কারণে হাসপাতালে ভর্তি হলো, তার উপসর্গ কি? ডায়াগনোসিস কি? কি চিকিৎসা দেওয়া হলো। সবই শেখা হয়ে গেল। আর এখানে না গিয়ে যদি সে অন্য কোথাও যায়। রাজনীতির কথা বলে, আড্ডা, বিভিন্ন কাজে মগ্ন থাকে। তাহলে সেটা অন্য জিনিস।

আমি রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলাম। ঢাকা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। রাজনীতি যে কম করেছি, তা নয়। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলাম। আমি যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবেও কাজ করেছি। তখন আমীর হোসেন আমু সাহেব যুবলীগের চেয়ারম্যান ছিলেন। তারপরও আমি এদিকে (চিকিৎসা পেশা) চলে এসেছি। কেন? কারণ, আন্তরিকতার সাথে আমি হাসপাতালে কাজ করেছি। স্যাররা, আমাদের যেগুলো শিখিয়েছেন, সেগুলো আমরা ভালোভাবে শেখার চেষ্টা করেছি এবং রোগীদেরকে সে আলোকে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আন্তরিকতা, অধ্যাবসায় ও পরিশ্রমের মাধ্যমে সফল হওয়া যায়।

মেডিভয়েস: বাংলাদেশের চিকিৎসাব্যবস্থার উন্নয়নে আপনার পরামর্শ জানতে চাই?

অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া: ইতিমধ্যে সরকার অনেকগুলো ইনিশিয়েটিভ হাতে নিয়েছে। দেশে পাঁচটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি একটি যুগান্তকারী ঘটনা। এতগুলো মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর মধ্যে আছে কিনা সন্দেহ। তা ছাড়া পোস্ট গ্রাজুয়েশন ইনস্টিটিউট করা হয়েছে। হার্টের জন্য ইনস্টিটিউট, ব্রেনের জন্য ইনস্টিটিউট, চোখের জন্য ইনস্টিটিউট, মানসিক রোগের জন্য ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন ইনস্টিটিউট করা হয়েছে। এতে দক্ষ জনশক্তি বাড়ছে। সেইসাথে জেনারেল হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো আছেই। একদিকে যেমন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে গবেষণার সুযোগ দিন দিন বাড়ছে। সরকারের তরফ থেকেও বিনিয়োগ করা হচ্ছে।

আজকে অনেকেই বলতে পারেন, করোনা নিয়ে আমাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থা কতটুকু ভঙ্গুর এবং কতটুকু সীমাবদ্ধ, হয়তো এ রকম প্রশ্ন দেখা দিতে পারে সাংবাদিকদের মধ্যে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ, ইউরোপের মতো দেশ, যাদের ইনকাম আমাদের চেয়ে অনেক বেশি, তারাও কিন্তু এই করোনায় হিমশিম খেয়েছে। তাদেরও চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের মৃত্যুর সংখ্যা দশ লাখের কাছাকাছি। সে তুলনায় আমাদের মৃত্যুর সংখ্যা কম। আমাদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে সক্ষমতার সাথে মোকাবিলা করেছিলাম। করোনা রোগীদের যথেষ্ট সেবাদান করা হয়েছে।

পরবর্তীতে অমিক্রন নিয়ে আমাদের মধ্যে যে একটা ভয়-ভীতি দেখা দিয়েছিল। সেখানে মৃত্যুর সংখ্যাটা কম ছিল। যেকোনো মৃত্যু আমাদের জন্য দুঃখের ও মর্মান্তিক। ষাটোর্ধ্বদের বিভিন্ন সমস্যার কারণে তাদের মৃত্যু বেশি হয়েছে। গত কয়েকদিন থেকে মৃত্যু সংখ্যা শূন্য। এতে আমরা একটা স্বস্তির পর্যায়ে আছি। তবে এটা ঠিক, এখন টেকনোলজির যুগ। সেক্ষেত্রে আমাদের আরও উন্নতির সুযোগ রয়েছে। সে উন্নতির জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

মেডিভয়েস: বাংলাদেশে সামগ্রিক গবেষণার সংখ্যা কম। মেডিকেল সেক্টরে আরও কম। চিকিৎসকদের পেশাগত কারণে অনেক ব্যস্ততা থাকে, গবেষণায় মনোযোগী হতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অনেক বেশি। এক্ষেত্রে আপনার পরামর্শ জানতে চাই?

অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া: আমার একটা উদ্যোগ ছিল, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যাতে গবেষণায় মনোনিবেশ করেন। বাংলাদেশে গবেষণা হচ্ছে। হচ্ছে না যে, তা নয়; তবে আরও বেশি হওয়া প্রয়োজন। গবেষণার জন্য সরকারের তরফ থেকে বেশি বেশি তহবিল যেন আসে, সেটাও হচ্ছে। সেজন্য আমার একটা পরিকল্পনা ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নন-প্রাকটিসিং করানো। সেখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে হাসপাতালের বাজেট বরাদ্দ করে। আর শিক্ষকদের বেতন-ভাতা আসে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে। আমরা দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যেই আলাপ-আলোচনা করেছিলাম। মাঝখানে করোনা আসার কারণে এতে ভাটা পড়ে যায়।

চিকিৎসকদের যদি ক্লিনিক্যাল ওয়ার্কলোড কমে...। প্রথমত কথা হলো, আমাদের সবারই অর্থনৈতিক সমস্যা আছে। রোগীরা একদিকে যেমন সেবা পাচ্ছে, অন্যদিকে আমাদের কিছু আয় হচ্ছে। এটা না করে যদি এই সময়টুকু গবেষণার কাজে ব্যয় করতাম, তাহলে গবেষণার সংখ্যা অনেক গুণ বেড়ে যেত এবং জুনিয়র চিকিৎসকদের জন্য ভালো হতো।

মেডিভয়েস: দেশের তরুণ চিকিৎসকরা বেতন-ভাতায় স্বল্পতার কারণে হতাশ হয়ে পড়ছেন এবং পেশাও পরিবর্তন করছেন। তাদের জন্য আপনার পরামর্শ?

অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া: এটা ঠিকই বলেছেন। সরকারি চাকরিতে তবুও একটা মর্যাদা আছে। প্রাইভেট ক্লিনিকের চিকিৎসকরা যে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন, এটা আসলেই অত্যন্ত হতাশা-ব্যঞ্জক। সে তুলনায় অন্য প্রাইভেট এন্টারপ্রাইজের চাকরিতে দেখা যায়, একই লেভেলের তরুণরা অনেক বেশি বেতন পাচ্ছেন এবং আইটি সেক্টরে তো অনেক বেশি বেতন। সেদিক থেকে তারা ঠিকই হতাশার মধ্যে পড়ছে।

দেখুন, এমবিবিএস পাস করলে রোগীরা তাদের কাছে চিকিৎসা নিতে যেতে চায় না। সেখানে আপনাকে বিশেষজ্ঞ হতে হবে। বিশেষজ্ঞ হয়ে আপনাকে গড়ে তুলতে হলে ৩৫ বা ৩৬ বছর পর্যন্ত চলে যায়। জীবনের বা যৌবনের বড় একটা অংশ তাকে পরিশ্রম করতে হয়। আবার বিয়ে-শাদি করলে স্ত্রীর ভরণ-পোষণ, আবার বৃদ্ধ মা-বাবারও ভরণ-পোষণ। অর্থনৈতিক একটা সমস্যার মধ্যে তাকে পড়তেই হয়।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যাদের পেছনে অর্থনৈতিক সামর্থ না থাকে, তারা পোস্ট গ্রাজুয়েশনে আসতে পারে না। তখন তারা পেশা পরিবর্তন করে অন্য জায়গা চলে যাচ্ছে। অনেক চিকিৎসক বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে কাস্টমসে, কেউ পুলিশ সার্ভিসে, কেউ ফরেন সার্ভিসে আবার কেউ প্রশাসনেও চলে যাচ্ছে। মেধা অনুসারে যে যার মতো চলে যাচ্ছে। এ সংকট উত্তরণে আমাদেরকে চিন্তা করে উপায় বের করতে হবে। তারা তো আমাদের দেশেরই সন্তান, বাইরের কেউ নয়। তাদের মেধার মূল্যায়ন করতে হবে,  উপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিতে সকলকে সচেষ্ট থাকতে হবে।

মেডিভয়েস: বাংলাদেশ ৩৮টি মেডিকেল রয়েছে এবং আরও একটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি এবং সরকারি সবমিলিয়ে ১১০টি মেডিকেল রয়েছে। নতুন কোনো মেডিকেলের প্রয়োজন আছে?

অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া: আমি ব্যক্তিগতভাবে মনি করি, দেশে আর নতুন মেডিকেলের কোনো প্রয়োজন নেই। অধিকাংশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজগুলোর মধ্যে যথাযথ সুযোগ-সুবিধা নেই। সরকারির অনেকগুলোতে একই অবস্থা। সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর মধ্যে একটা সুবিধা হলো, সেখানে রোগীর কোনো কমতি নাই। থার্ড ইয়ার এবং ফোর্থ ইয়ারে ক্লিনিক্যাল সাবজেক্ট পড়ানোর জন্য সরকারি মেডিকেলে রোগীর অভাব নেই। কিন্তু প্রাইভেট মেডিকেল কলেজগুলোতে রোগীর অভাব। আমি দুই-তিনটা মেডিকেলে পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। ওই দিন তারা বাহির থেকে রোগী নিয়ে আসে।

এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি), সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করে, যাদের ছাত্র সংখ্যা অনুপাতে রোগী বা শয্যা সংখ্যা কম, সে সকল মেডিকেলের স্বীকৃতি ভেবে দেখা দরকার।

মেডিভয়েস: একটা অনুপাত রয়েছে ১, ৩ ও ৫; চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ান। বাংলাদেশে এ অনুপাতটা অনেক কম। এখন দেখা যাচ্ছে, নার্সের চেয়ে চিকিৎসক সংখ্যা বেশি। এ মুহূর্তে করণীয় কি?

অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া: এতদিন নার্সিং পেশায় মেয়েরা আসতে চাইতো না, একটা সামাজিক সমস্যার কারণে। সবাই আমরা তাদেরকে কেমন জানি..., এ পেশায় আসছে বলে অন্য চোখে দেখতাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটা যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে তাদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে সম্মান দেওয়া হয়েছে। এখন আমাদের অনেক মেয়ে আসছে, তারপরও জনসংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, এ অনুপাতে নার্সদের গড়ে তুলতে ব্যাপক সময়ের প্রয়োজন। 

এমইউ

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
ছেলের চোখে অধ্যাপক ডা. রিদওয়ানুর রহমান

সাতকানিয়ার চুপচাপ বালক যেভাবে হয়ে উঠেন কিংবদন্তি চিকিৎসক

  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
করোনা ও বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা

এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক