ক্যান্সার হলেই মৃত্যু, এটি ভুল প্রমাণিত হয়েছে: বিএসএমএমইউ উপাচার্য
মেডিভয়েস রিপোর্ট: মেডিভয়েস রিপোর্ট: ক্যান্সারে আক্রান্তদের নিশ্চিত মৃত্যুর ধারণা চিকিৎসার মাধ্যমে ভুল প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের সুস্থ করে তোলা সম্ভব।
আজ মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ব শিশু ক্যান্সার দিবসে বিএসএমএমইউতে আয়োজিত র্যালি ও আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
বিএসএমএমইউ ভিসি বলেন, ‘আগে ভাবা হতো ক্যান্সার হলেই মৃত্যু, কিন্তু চিকিৎসার মাধ্যমে তা ভুল প্রমাণিত হয়েছে।’
অধ্যাপক শারফুদ্দিন বলেন, বিএসএমএমইউতে এরই মধ্যে দুই হাজার রোগীকে সুস্থ করা হয়েছে। যদিও তা রোগীর তুলনায় অনেক কম। ক্যান্সার প্রতিরোধে শুধু চিকিৎসকদের এগিয়ে এলেই হবে না, সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে আন্তরিক হতে হবে।’
তিনি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিশু ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ তৈরি করা হচ্ছে। যাতে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে তাদের মাধ্যমে দেশব্যাপী চিকিৎসাসেবা প্রদান করা যায়।
বিএসএমএমইউর শিশু হেমাটোলজি এন্ড অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এটিএম আতিকুর রহমান বলেন, চিকিৎসার মাধ্যমে ক্যান্সারে আক্রান্ত অধিকাংশ শিশুই এই মরণব্যধি রোগ থেকে নিরাময় লাভ করে সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে। এ রোগের চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি উন্নত প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা রয়েছে।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, অতিরিক্ত পরিচালক (হাসপাতাল) পবিত্র কুমার দেবনাথ প্রমুখ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘জনসংখ্যাভিত্তিক কোনো জরিপ না থাকায় কী পরিমাণ শিশু ক্যান্সারে ভুগছে তার প্রকৃত চিত্র উঠে আসছে না। ফলে চিকিৎসায় সে অনুযায়ী গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। ঢাকাসহ অন্যান্য বিভাগে ক্যানসার ইনস্টিটিউট নেই। যেগুলো হচ্ছে, বাস্তবায়িত হতে আরও আড়াই থেকে তিন বছর।’
বড়দের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শিশুরাও মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিদিন নতুন করে যত মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়, তাদের বড় একটি অংশ শিশু। বছরে প্রায় ২০ হাজার শিশু এই মরণব্যাধির শিকার হচ্ছে। আক্রান্ত শিশুদের ৭৫ ভাগই থাকছে চিকিৎসার বাইরে।
ক্যান্সার চিকিৎসায় উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে অনুন্নত দেশগুলোর অনেক অসমতা ও বৈষম্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, উন্নত বিশ্বে আক্রান্ত ৮০ শতাংশই ভালো হয়। কিন্তু দরিদ্র দেশগুলোতে সেটি ২০ শতাংশ। এই বৈষম্য দূর করতে ৯৩টি দেশের মধ্যে দিবসটি পালিত হয় বলে জানান তারা।
ক্যান্সার চিকিৎসায় দেশের একমাত্র ও সবচেয়ে বড় চিকিৎসাকেন্দ্র জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে প্রতিদিন যত ক্যান্সার রোগী সেবা নিতে আসে, তার আড়াই শতাংশই শিশু। এর মধ্যে চিকিৎসার আওতায় আসছে মাত্র ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। আর সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাচ্ছে বাকিরা। এমন সংকটাবস্থা নিয়েই বিশ্বের ৯৩টি দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ মঙ্গলবার পালিত হচ্ছে শিশু ক্যান্সার।
এএইচ