ঢাবির ফাইনাল প্রফ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত কার হাতে?
মুন্নাফ রশিদ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজগুলোর স্থগিত ফাইনাল প্রফেশনাল পরীক্ষা আয়োজন নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। পরীক্ষা স্থগিতের পর থেকে কয়েক দফায় মিটিংও হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত অঙ্কুরেই রয়ে গেছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে ফাইনাল প্রফেশনাল পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত মূলত কার হাতে? বারবার পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও পরীক্ষার্থীরা।
নিয়ম অনুযায়ী, ডিন অফিস পরীক্ষার আয়োজন করে থাকে। তবে সময়সূচি প্রকাশের পরও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় দফায় দফায় পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় নতুন পরীক্ষা আয়োজন নিয়ে বিপাকে পড়েছে সংশ্লিষ্টরা। ডিন অফিস জানিয়েছে, করোনার কারণে পরীক্ষা ১৪ দিন পেছানো হয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতি এখনো আশানুরূপ উন্নতি হয়নি, এ অবস্থায় নতুন সময়সূচি ঘোষণা করা হলে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা অনিবার্য হয়ে পড়বে।
সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ রোধে সারাদেশে কঠোর লকডাউনের কারণে ঢাবি অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজগুলোর ফাইনাল প্রফেশনাল পরীক্ষা ১৪ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়। এ নিয়ে চতুর্থ দফায় পিছিয়ে গেলো স্বাস্থ্য সেবার সনদ পাওয়ার এ পরীক্ষা। গত ২৬ জুন কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটির চেয়ারম্যান ডা. শাহরিয়ার নবীর বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়।
করোনা মহামারীর মধ্যে প্রয়োজনে বিকল্প পদ্ধতিতে পরীক্ষা আয়োজনের কথা বলছেন শিক্ষার্থীরা। অন্যথায় চিকিৎসক সংকট আরও তীব্র হলে তা সামলানো কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। তারা বলছেন, পরীক্ষা স্থগিত না করে, বরং চিকিৎসক তৈরির লক্ষ্যে এ পরিস্থিতিতেই পরীক্ষা চলমান রাখা জরুরি।
মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষদেরও একই মত। তারাও পরীক্ষা নেওয়ার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। তারা বলছেন, পরীক্ষা হোক সেই সম্মতি আমাদের সবারই রয়েছে। তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব অধিভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডিনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ফাইনাল পরীক্ষার বিষয়ে সম্প্রতি স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সাথে সকল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষদের একটি মিটিং হয়। তবে সেখানে পরীক্ষার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
আলোচনার বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন মেডিভয়েসকে বলেন, ‘আমাদের ওই মিটিংটি ফাইনাল প্রফ পরীক্ষার বিষয়ে ছিল না। সকল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষদের সাথে অধিদপ্তরের নিয়মিত মিটিংয়ের একটি ছিল এটি। সুতরাং সেখানে পরীক্ষার বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। পরীক্ষার সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার। তবে আমরা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. টিটো মিঞা মেডিভয়েসকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মিটিংটি মূলত প্রশাসনিক একটি মিটিং ছিল। সেখানে পরীক্ষার বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। পরীক্ষা নেওয়ার সকল প্রস্তুতি আমাদের থাকলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমাতের হাতে না। পরীক্ষার সকল সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। বিশ্ববিদ্যালয় চাইলেই পরীক্ষা নিতে পারে। এখানে আমাদের কিছু করার এখতিয়ার নেই।’
তবে শিক্ষার্থীরাও প্রস্তুত রয়েছে উল্লেখ করে বলেন তিনি বলেন, ‘শুরুতে শিক্ষার্থীদের কিছু গাফিলতিও ছিল। তারা এক সময় পরীক্ষা দিতে একেবারেই নারাজ ছিল। তবে আমরা যথেষ্ট চেষ্টা করে যাচ্ছি, যাতে শিক্ষার্থীরা দ্রুত পরীক্ষায় বসতে পারে।’
এ প্রসঙ্গে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এবিএম মাকসুদুল আলম মেডিভয়েসকে বলেন, ‘আমরা সকল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষসহ সকল শিক্ষকরা পরীক্ষার নেওয়ার ব্যাপারে আমাদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছি। আমরা সর্বসম্মতিক্রমে পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে এবং প্রস্তুত রয়েছি। কিন্তু পরীক্ষা বাস্তবায়নের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটির চেয়ারম্যান ডা. শাহরিয়ার নবী মেডিভয়েসকে বলেন, ‘পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহযোগিতা দরকার। আমাদের কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো উভয়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে করতে হবে। সে ব্যাপারে আমি সহযোগিতা কামনা করেছি।’
তিনি বলেন, ‘ঈদের পরে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য অনেকেই মত দিচ্ছেন। তবে আমি চাচ্ছি, যে ঈদের আগেই অন্তত দুটি লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার। কেননা শুরু হলে অন্তত ধারাবাহিকতা থাকবে। এছাড়া শিক্ষার্থীরাও আশ্বাস্ত হবে। এটা বাস্তবায়নের জন্য আমি যথেষ্ট চেষ্টা করছি।’
-
০৩ অগাস্ট, ২০২৩
-
২৮ মার্চ, ২০২৩
-
১৬ জানুয়ারী, ২০২২
শিক্ষাকাল পূর্ণ হওয়ার আগে রুটিন
ফাইনাল প্রফ পরীক্ষা পেছানোর দাবি রাবির মেডিকেল শিক্ষার্থীদের
-
১০ নভেম্বর, ২০২১
-
২৪ অক্টোবর, ২০২১
-
১৮ অক্টোবর, ২০২১
-
১৮ অক্টোবর, ২০২১
-
০৮ অগাস্ট, ২০২১
-
০৩ অগাস্ট, ২০২১
-
৩১ জুলাই, ২০২১