হাতুড়ে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার

প্রত্যন্ত এলাকায় চিকিৎসা পরিষেবা দিতে কোয়াক (হাতুড়ে) চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার। জেলা ও মহকুমা সদর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা এই প্রশিক্ষণ দেবেন।
ওই কোয়াক ডাক্তারদের বেছে নিয়ে কীভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, তার পাঠ্যক্রমও তৈরি করা হচ্ছে। হাতুড়ে চিকিৎসকদের দিয়ে গ্রামীণ এলাকাগুলিতে ঠিকঠাক ন্যূনতম প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্যই এই উদ্যোগ।
ভারতের স্বাস্থ্য দপ্তর সম্প্রতি সমীক্ষা করে দেখেছে, সারা রাজ্যে এ ধরনের চিকিৎসক প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার। অন্য দিকে, গ্রামীণ হাসপালগুলিতে চিকিৎসক প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়।
দেখা যাচ্ছে, কোনও শারীরিক সমস্যা হলে গ্রামাঞ্চলের মানুষের ভরসা হয়ে ওঠেন ওই হাতুড়ে চিকিৎসকেরাই। কিন্তু যথাযথ প্রশিক্ষণ না থাকায় এঁরা সব সময় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে উঠতে পারেন না।
অনেক সময় নানা কারণে তা রোগীর জন্য প্রাণঘাতীও হয়ে ওঠে।
দেশটির স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এই মুহূর্তে রাজ্যে যে–সংখ্যক চিকিৎসক রয়েছেন, তাতে গ্রামে পুরো পরিষেবা দিয়ে ওঠা অনেক সময় সম্ভব হয়ে ওঠে না।
মেডিক্যাল কলেজে আসন বাড়ায় আগামী ৫/৬ বছর পর নতুন যে–চিকিৎসকরা আসবেন, তাতে এই ঘাটতি কিছুটা পূরণ হবে।
মাঝের এই সময়ে গ্রামীণ এলাকায় কোয়াক (হাতুড়ে) চিকিৎসকদের যদি প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজে লাগানো যায়, তা হলে চিকিৎসকদের এই ঘাটতি অনেকটাই পুষিয়ে দেওয়া যাবে। গ্রামের মানুষও ছোটখাটো রোগভোগে যথাযথ চিকিৎসা পেতে পারবেন।
পশ্চিম বাংলার বীরভূম জেলা থেকে শুরু হচ্ছে এই উদ্যোগ। পাইলট প্রকল্প হিসেবে সিউড়িতে নভেম্বরেই শুরু হচ্ছে প্রশিক্ষণ শিবির। সেখানে সরকারি চিকিৎসকেরা প্রশিক্ষণ দেবেন হাতুড়ে চিকিৎসকদের। শেখাবেন অ্যানাটমি।
যেখানে যেমনটা প্রয়োজন, সেখানে তেমন করেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, হাতুড়ে চিকিৎসকেরা অনেকেই পসার জমাতে গিয়ে চিকিৎসার খুঁটিনাটি বেশ খানিকটা শিখে গেছেন। সে–ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ–পর্ব হবে তুলনামূলক কম।
আবার, স্বল্পশিক্ষিত হাতুড়েদের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ–পর্ব হবে একটু লম্বাই। দেখা গেছে, জ্বর হলেই তা নির্ণয় না করে সাধারণ ওষুধ দিয়ে দেওয়া হয়।
অথচ পরে দেখা যায় হয়ত ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়া। এতে সমস্যায় পড়েন রোগীরা। অনেক সময় তা প্রাণঘাতীও হয়ে ওঠে। এই সমস্যা কিছুটা দূর করতেই এমন উদ্যোগ।
জানা গেছে, প্রয়োজন অনুযায়ী যে এলাকায় যে–ধরনের চিকিৎসা দরকার, সেখানে সে–রকমই সেখানো হবে।
যেমন সুন্দরবন এলাকায় সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা অন্য জেলার তুলনায় বেশি। সেখানে সাপে কাটলে রোগীকে বাঁচাতে কী চিকিৎসা জরুরি, সেটাই বেশি করে শেখানো হবে।
পাশাপাশি শেখানো হবে জ্বর, সর্দি–কাশির মতো সাধারণ রোগের চিকিৎসাও।
সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ সজল বিশ্বাস বলেছেন, ‘কোয়াক চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে কাজে লাগানোর দাবি অনেক দিন ধরেই জানিয়ে আসছি।
এ ধরনের উদ্যোগ হলে, খুবই ভাল। তবে চিকিৎসকদের বিকল্প হিসেবে তুলে ধরা হলে আমরা তার বিরোধী। কারণ তাঁরা ন্যূনতম চিকিৎসাই করতে পারবেন। সব ধরনের চিকিৎসা নয়।
সৌজন্যে : আজকাল।
বিশেষ সাক্ষাৎকার
ইন্টার্নদের ভাতা ৩০ হাজার টাকা হওয়া উচিত: মুগদা মেডিকেল অধ্যক্ষ
আসছে নতুন কাব্যগ্রন্থ
সাহিত্য চর্চায় আনন্দ খুঁজে পাই: অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন
