বিএসএমএমইউ রেসিডেন্টদের চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ
মুন্নাফ রশিদ: দেশের চিকিৎসাবিদ্যায় অনন্য এক নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)। প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা, গবেষণা ও চিকিৎসার পাশাপাশি উচ্চশিক্ষার প্রধান ভরসাস্থল। তবে বিএসএমএমইউতে অধ্যয়নরত রেসিডেন্টদের অভিযোগ, রোগীর সংস্পর্শে আসা চিকিৎসকরা এখানে যথাযথ চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। যদিও বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে অফিসিয়াল একটি আদেশ থাকার পরও এমন অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোগীদের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে রেসিডেন্সি কোর্সসহ বিভিন্ন কোর্সে প্রশিক্ষণরত চিকিৎসকদের ওপরই প্রতিষ্ঠানটি অনেকাংশে নির্ভরশীল। প্রশিক্ষণরত এ চিকিৎসকরাই মূলত বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে কোভিড এবং নন-কোভিড ওয়ার্ডসহ অন্যান্য ওয়ার্ডগুলোতে রোগীর সরাসরি সংস্পর্শে থেকে সার্বক্ষণিক সেবা দিয়ে থাকেন।
করোনার সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে এসব চিকিৎসকরা রোগীর সেবা দিয়ে থাকলেও প্রতিষ্ঠানটিতে নিজেদের সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতা। তাদের অভিযোগ, অন্যান্য মেডিকেল কলেজগুলোতে রেসিডেন্ট চিকিৎসকসহ সকল স্টাফদের ব্যক্তিগত চিকিৎসা পাওয়ার ক্ষেত্রে নানা ধরনের সুবিধা দেওয়া হয়। তবে বিএসএমএমইউতে সে ধরনের কোনও সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয় না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসএমএইউর একজন রেসিডেন্ট চিকিৎসক মেডিভয়েসকে বলেন, ‘বারডেমসহ অন্যান্য মেডিকেল কলেজগুলোতে রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পাওয়াসহ নানা ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকেন। শুধু তাই না, অন্য মেডিকেলের রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের স্বজনদের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা সুবিধা। শুধুমাত্র আমরাই বঞ্চিত।’
সপ্তাহখানেক আগে নিজের চিকিৎসার জন্য বিএসএমএইউর মেডিসিন বিভাগে গিয়েছিলেন একজন রেসিডেন্ট চিকিৎসক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী ওই চিকিৎসক মেডিভয়েসকে বলেন, ‘চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র নেওয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য প্যাথলজি বিভাগে যান। সেখানে পরিচয় দিয়েও আমি কোনও ছাড় পাইনি। এমনকি বিএসএমএমইউর পরিচয়পত্র দেখানোর পরও ছাড় দেওয়া হয়নি।’
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া মেডিভয়েসকে বলেন, ‘অফিসিয়াল নির্দেশের মাধ্যমে তাদেরকে সব ধরনের সুবিধা দেওয়ার জন্য বলা আছে। এখন তারা যদি আমাদের কাছে না এসে অন্য জায়গায় কথা বলে তাহলে এটা তো তার ব্যক্তিগত বিষয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘অফিসিয়াল নোটিশে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত রেসিডেন্ট চিকিৎসক বা অন্য চিকিৎসক যেই হোক তারা এবং তাদের পরিবারবর্গকে চিকিৎসা সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে স্পষ্ট বলা আছে। আর এ ধরনের অভিযোগ আগে কখনও আসেনি। এটিই প্রথম শুনলাম যে, নাম পরিচয় দেওয়ার পরও অফিসিয়াল সুবিধা পাননি।’
তরুণ ওই চিকিৎসককে কেন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়নি সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সাপেক্ষে অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও আশ্বাস দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।
এ প্রসঙ্গে বিএসএমএমইউর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. জুলফিকার আহমেদ আমিন মেডিভয়েসকে বলেন, ‘এখানে রেসিডেন্টসহ অন্যান্য চিকিৎসক যারা করোনায় চিকিৎসা দিচ্ছেন, তাদের জন্য সবই বিনামূল্যে করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএসএমএমইউ কিন্তু পাবলিক বা সরকারি হাসপাতাল না, এটি একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। সুতরাং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কিছু নিয়মকানুন থাকে এবং রেসিডেন্টসহ অন্যান্য চিকিৎসকদেরকেও সেসব নিয়মের মধ্যেই চলতে হয়।’
তবে প্রশিক্ষণরত চিকিৎসকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পরিচালক বলেন, ‘চিকিৎসকরা যদি এমন দাবি করে যে, তারা কিছুই পাচ্ছে না তাহলে সেটি ভুল। কেননা করোনার এই প্রেক্ষাপটে তারা বিনামূল্যে সকল সুবিধা পাচ্ছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে আমার কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি। আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
-
২৮ মার্চ, ২০২৪
-
২৮ মার্চ, ২০২৪
-
২৭ মার্চ, ২০২৪
-
২৬ মার্চ, ২০২৪
-
২৪ মার্চ, ২০২৪
-
২২ মার্চ, ২০২৪
-
১৪ মার্চ, ২০২৪
-
১৪ মার্চ, ২০২৪
-
১৩ মার্চ, ২০২৪
-
১৩ মার্চ, ২০২৪