এক দিনে চলে গেলেন তিন চিকিৎসক
মেডিভয়েস রিপোর্ট: এক দিনে না ফেরার দেশে চলে গেছেন তিনজন চিকিৎসক। আজ রোববার (২৫ অক্টোবর) সকালে দুইজন এবং পরে আরেকজনের মৃত্যু হয়। নিজ নিজ ক্যাম্পাস ও গণ্ডিতে তুখোড় জনপ্রিয় এবং স্বাস্থ্যখাতের এই প্রাণভোমরাদের হারিয়ে শোকে বিহ্বল চিকিৎসক সমাজ।
এর মধ্যে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন বগুড়ার টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. একেএম মাসুদুর রহমান। আর সিমুডের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. জাহিদুর রশিদ সুমন ডেঙ্গুতে এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের রেডিওথেরাপি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. তাপস মিত্র মারা গেছেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে।
টিএমএসএস মেডিকেলের অধ্যাপক ডা. একেএম মাসুদুর রহমান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আজ রোববার (২৫ অক্টোবর) মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
অধ্যাপক একেএম মাসুদুর রহমান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (সিএমসি) থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। তিনি ছিলেন (সিএমসি) ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
তাঁর নেতৃত্বেই টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথম করোনা ইউনিট চালু হয় এবং তাঁর চিকিৎসায় শত শত করোনা রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অবশেষে এই সম্মুখযোদ্ধা নিজেই হেরে গেলেন ভাইরাসটির কাছে।
অন্য দিকে সকাল সাড়ে সাতটায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সিমুডের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. জাহিদুর রশিদ সুমন আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
চিকিৎসকদের সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি রাইটস অ্যান্ড রেসপন্সিবিলিটিসের (এফডিএসআর) কার্যকরী কমিটির সদস্য ডা. মো. রশিদুল হক মেডিভয়েসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ডা. জাহিদুর রশিদ সুমন ডেঙ্গু হিমোরেজিক ফিভার থেকে কার্ডিয়াক এরেস্টে আক্রান্ত হন। তারপর আজ সকালে তিনি মারা যান।
ডা. জাহিদুর রশিদ সুমন ইয়ুথ ক্লাব অব বাংলাদেশের উপদেষ্টা হিসেবেও কর্মরত ছিলেন।
এছাড়াও নিজ বাসায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) রেডিওথেরাপি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. তাপস মিত্র। আজ রোববার (২৫ অক্টোবর) সকালে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার পর হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই মারা যান তিনি।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিজ বাসার পানির ট্যাংখ দেখতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন ডা. তাপস মিত্র। সকাল ৯টার দিকে তাঁকে নগরীর মেহেদীবাগ বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখানেই মারা যান তিনি।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার এ কৃতি সন্তান একই মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। তিনি ছিলেন চমেক-৩০ ব্যাচের শিক্ষার্থী।
তিনি অল্প সময়ের ব্যবধানে একজন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ হিসেবে চট্টগ্রামে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। অমায়িক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে জনসাধারণের মন জয় করে নিয়েছিলেন তিনি।
এক দিনে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মৃত্যুতে মেডিভয়েস পরিবার গভীরভাবে শোকাহত।