আইরিনের ডাক্তারি পড়ার অনিশ্চয়তা কাটলো

মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়া মেধাবী হত-দরিদ্র ছাত্রী আইরিন আক্তারের অনিশ্চয়তা দুর হয়েছে। জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ ও জেলা পুলিশের উদ্যোগে সহায়তা দেয়া হয়েছে তাকে। অর্থাভাবে ভর্তি হতে না পারার অনিশ্চয়তা আপাতত কেটে গেছে তার।
এখন নির্ধারিত সময়ে(৩১ অক্টোবরের মধ্যে) বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পারবে সে। ক্রান্তিকাল অতিক্রম করলেও অধ্যয়নকালীন সময়ে বিভিন্ন সুযোগ তৈরির আশ্বাসও দিয়েছেন নীলফামারীর জেলা প্রশাসক জাকির হোসেন।
সোমবার দুপুরে আইরিনের হাতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ডিসি অফিসে জেলা প্রশাসক জাকির হাসেন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ, জে, এম, এরশাদ আহসান হাবিব ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পুলিশ সুপার জাকির হাসেন খান নগদ টাকা তুলে দেন।
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ৭হাজার, জেলা পরিষদ ১০হাজার, জেলা পুলিশ ১৫হাজার এবং নেত্রকোনার আইনজীবী মাসুদ রানার দেয়া ২০হাজার টাকা প্রদান করা হয় আইরিনকে। এর আগে রোববার বিকেলে তাকে সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে ১৫হাজার টাকা প্রদান করেন ইউএনও আবু মুসা সালেহ জঙ্গী।
জেলা প্রশাসক জাকির হোসেন জানান, সরকারি একজন কর্মকর্তা তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ২০হাজার টাকা দেয়ার জন্য। মঙ্গলবার ওই টাকা প্রদান করা হবে তাকে। নেত্রকোনার আইনজীবীর দেয়া ২০হাজার টাকা কার্যালয়ে প্রদান করেন পুলিশ সুপার জাকির হোসেন খান।
ডিসি অফিসে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মুজিবুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার ইমাম, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর সুফল চন্দ্র গোলদার এবং পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু মারুফ হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির ও জাকারিয়া রহমান, সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত বাবুল আকতার ও গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক শাহজাহান পাশা উপস্থিত ছিলেন।
মেধাবী আইরিন জেলার সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কিসামত কামারপুকুর মিস্ত্রিপাড়া গ্রামের ইউনুস আলীর মেয়ে। চলতি শিক্ষাবর্ষে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর আর্থিক সংকটের কারণে অনিশ্চয়তায় পড়েছিলো সে।
আইরিন সৈয়দপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে কারিগরি কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-পাঁচ লাভ করে। এছাড়া বাগডোকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বৃত্তি পেয়েছিলো আইরিন।
আইরিন জানান, দিনমজুর বাবা আমার পড়াশোনার খরচ বহন করতে পারছিলেন না। স্যারেরা আমাকে বিনে পয়সায় প্রাইভেট পড়িয়েছেন। হেঁটে স্কুল কলেজ গিয়েছিলাম। মেডিক্যালে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েও পরিবার থেকে টাকা দিতে না পারায় অনিশ্চয়তায় পড়ি।
আমাকে আর্থিক ভাবে সহযোগীতা করে লক্ষ্যে পৌঁছানোর সুযোগ সৃষ্টি করায় আমি সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
জেলা প্রশাসক জাকির হোসেন জানান, আমি বগুড়া জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে তার কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের সাথে কথা বলে পড়াশোনাকালীন যাবতীয় সুযোগ সুবিধা প্রদানের অনুরোধ করবো।
বাবা মায়ের একমাত্র সন্তানদের মধ্যে আইরিনেই বড়। বাকি দুই ভাই পড়ছেন স্কুলে। আর্থিক সহায়তা গ্রহণকালে আইরিন ছাড়াও বাবা ইউনুস আলী ও চাচা আইয়ুব আলী উপস্থিত ছিলেন।
