যারা মেডিকেলে পড়েও অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন...
যারা মেডিকেলে পড়ে চিকিৎসা ছেড়ে অন্যত্র যাচ্ছেন তারা নিঃসন্দেহে চিকিৎসকদের চেয়ে অনেক বেশি সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকবেন, অভিনন্দন তাদেরকে। কিন্তু এটা কোন অর্জন নয়, বরং ভয়ঙ্কর বিসর্জন।
চিকিৎসা পেশায় চিকিৎসকদের সম্মান নেই, আছে অপমান আর গ্লানি। সম্মান আজও অর্জিত হয়নি এটা চিকিৎসকদের ব্যর্থতা। আর ব্যর্থতার সমাধান চিকিৎসা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়া, তা কিন্তু মোটেই না! এটা হল ব্যক্তিগতভাবে গুঁটি কয়েক লোকের ভাল থাকা, কিন্তু সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় এটি বিন্দুমাত্র কোন পরিবর্তন আনবে না। পেশাগত পারিপার্শ্বে তারা তাদের মত পরিবর্তিত হবে, মেধা হারিয়ে এ পেশার নাজুকতা দিনে দিনে বরং আরো বেশি বাড়বে।
একজন চিকিৎসক তার ছোট থেকে বড় সামগ্রিক একাডেমিক লাইফে সীমাহীন কষ্ট করে সর্বোচ্চ অবস্থান অর্জন করে একটি মেডিকেলে পড়ার যোগ্য হয়। এটাই স্বাভাবিক। এটাই মর্যাদার। কিন্তু আত্মগ্লানির কারণ এদেশের সিস্টেম। যেখানে অন্যদের চেয়ে উঁচুতে রাখার কথা, সেখানে সমান তো দূরের কথা, বাস্তবতা যার চেয়ে অনেক অনেক নিচে।
আর এই সামগ্রিক ফল, আমাদের মনে ভীতি তৈরি করছে, আমরা বাধ্য হচ্ছি অন্যত্র যেতে।
যারা যাচ্ছেন, এদেশের সিস্টেমে তারা তাদের অবস্থানে আমাদের চেয়ে সুপিরিয়র থাকবেন, কিন্তু আপনি চিকিৎসক - কারো চেয়ে ইনফিরিয়র, এটা ভাবা ঠিক না। বরং বিষয়টি হল, আপনার মায়ের ডায়বেটিস, বাবার হাইপারটেনশন, আপনি অনেক বেশি সুপিরিয়র এখানে, একজন চিকিৎসক হিসেবে প্রতি মুহূর্তের যে কোন সময় আপনার অন্যের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে না, আপনি নিজেই অনেক ডিসিশন জরুরি মুহূর্তে নিতে পারছেন, দিতে পারছেন সমাধান, যা অন্য কারো পক্ষে কখনোই সম্ভব না।
এই কাজগুলো সবাই পারে না, সবার সেই সাহসও থাকে না। মনে করুন আপনার সেই সাহস আছে। যার ফলস্বরূপ অন্যের লাথি-গুতা গালি-গালাজ খেলেও, কিছু জিনিস অটোমেটিকভাবে পেয়ে যান সেটি কিছু মানুষের দোয়া ও ভালবাসা।
আমাদের দেশটাই এমন। তাই মেডিকেলে ভর্তি হওয়া কাউকে আমি বলি না, তুমি অন্যত্র যাও। বরং তার চেয়ে বেশি পছন্দের পরামর্শ হল, চিকিৎসক হবার যোগ্যতা সবার থাকে না। তুমি যোগ্য বলেই এসেছো, এদেশের ব্যর্থ স্বাস্থ্য সিস্টেমের রীতিনীতিতে খাপ খাইয়ে নিতে না পারলো, দেশ ছেড়ে চলে যাও, সেবা অন্যত্র সম্মান নিয়ে দেও।
পোশাক ওয়ালা কনস্টেবলকেও স্যার বলে বসাবে, দাঁড়িয়ে রাখবে তোমাকে, এটাই এদেশের সিস্টেম। অন্য কেউ এসি রুমে প্রটোকল নিয়ে থাকবে, কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তুমি বসবা হাতল ভাঙা চেয়ারে, এটা স্বাস্থ্য ক্যাডারের ব্যর্থতা।
সেই ব্যর্থতার অর্জন সবাই অন্যত্র চলে যাক, বা মেধাবীদের চিকিৎসা পেশা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার কোন রীতি তৈরি হোক এই ধারণা আমি মোটেও পোষণ করি না।
কারণ, দিনশেষে এসবই ছোট ছোট ক্ষতি, আর এর ফলে সেদিন খুব বেশি দূরে নয় যেদিন আপনার পরিবারকে ভাল চিকিৎসা দেয়ার মত চিকিৎসক আর একজনও অবশিষ্ট থাকবে না। ক্লাসের সবচেয়ে দূর্বল ছাত্রকে জিজ্ঞেস করা হলে কোন উপায় না দেখে সে বাধ্য হয়ে বলবে, 'আমি চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা....!'
-
২৯ জানুয়ারী, ২০২৪
সময় বাকি দুই দিন
চিকিৎসকদের আয়কর রিটার্ন দাখিল: প্রমাণপত্র জমার নির্দেশ বিএমডিসির
-
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩
-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৩
-
২৮ নভেম্বর, ২০২৩
-
১৩ নভেম্বর, ২০২৩
-
১০ নভেম্বর, ২০২৩
-
০৭ নভেম্বর, ২০২৩
-
০৭ নভেম্বর, ২০২৩
-
০৬ নভেম্বর, ২০২৩
-
২১ অক্টোবর, ২০২৩