
ডা. আব্দুন নূর তূষার
উপদেষ্টা, ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি, রাইটস এন্ড রেস্পন্সিবিলিটিজ (এফডিএসআর)
সাবেক শিক্ষার্থী, ঢাকা মেডিকেল কলেজ
১৯ জুন, ২০২০ ০৫:৪৬ পিএম
টেলিমেডিসিনের নামে গণমাধ্যমে প্রেসক্রিপশন দেওয়া অনৈতিক

প্রিয় চিকিৎসকবৃন্দ, গণমাধ্যমে রোগ নিয়ে কথা বলার সময় মনে রাখা দরকার যে আপনারা ওষুধের বিপণন করবেন না।
গণমাধ্যমে ওষুধের ব্র্যান্ডনেম, ডোজ এবং যেভাবে দোকানে পাওয়া যায় সেটা বলা আনএথিকাল। আপনি এসব বলে মূলত বিশেষ বিশেষ কোম্পানির ওষুধ বিপণন করতে সহায়তা করছেন, মানুষকে ওষুধ মজুদ করতে উৎসাহ জোগাচ্ছেন।
শুধু তাই না আপনারা অনেকেই টেলিভিশনে প্রেসক্রিপশন দেন। এটাও আনএথিক্যাল। টেলিমেডিসিন আর টেলিফোনে/টেলিভিশনে চিকিৎসা দেওয়া এক না।
বিদেশে টেলিমেডিসিন সেবা দিতে গেলে HIPAA compliant হতে হয়। আপনি ওষুধ দেবার সময় এফডিএ বা আন্তর্জাতিক সংস্থার স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলেন। ডোজ ঠিক করার সময় আমেরিকান বা ব্রিটিশ স্ট্যান্ডার্ড ফার্মাকোপিয়া অনুসরণ করেন।
আর টেলিমেডিসিন সেবা দেবার নামে, মনের ইচ্ছামতো টেলিভিশনে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় ডোজসহ ওষুধ বলে দেন?
Telemedicine Definition
A tool that makes healthcare more accessible, cost-effective, and that increases patient engagement – is telemedicine. Since making its debut in the late 1950’s, advances in telemedicine has contributed to seniors having the choice to age in place. In addition, the patients that reside in rural areas that previously had difficulties accessing a physician, can now reach them virtually.
Physicians and patients can share information in real time from one computer screen to another. And they can even see and capture readings from medical devices at a faraway location. Using telemedicine software, patients can see a doctor for diagnosis and treatment without having to wait for an appointment. Patients can consult a physician at the comfort of their home.
What is Telehealth?
Telehealth as “the utilization of electronic information and telecommunications technologies to support and promote long-distance clinical health care, patient and professional health education, public health and health administration.”
While this definition sounds a lot like telemedicine, there is one distinct difference. Unlike telemedicine, telehealth also covers non-clinical events like administrative meetings, continuing medical education (CME), and physician training. Telehealth is not a specific service, but a collection of methods to improve patient care and education delivery.
পরিষ্কার বলা আছে, আপনি ও আপনার রোগী একে অপরকে দেখতে পারতে হবে। কম্পিউটার বা যে ডিভাইস ব্যবহার করবেন সেখানে রিপোর্ট আদান-প্রদানের ব্যবস্থা থাকতে হবে। টেলিমেডিসিন টু ওয়ে কমিউনিকেশন হতে হবে। একজনের ওষুধ থেকে শুরু করে তার পরিচয় সব গোপন থাকবে। যার দরকার সে জানবে চিকিৎসা, সকলে সেটা জানবে না। যেটা টিভি রেডিওতে ওষুধ দিলে সম্ভব না।
আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ আইভারমেকটিন, ডেক্সামেথাসন, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনসহ নানা রকম ওষুধ নিয়ে যেসব বক্তব্য দিচ্ছেন এসব অনৈতিক (আনএথিক্যাল) ও HIPAA অনুযায়ী ম্যালপ্র্যাকটিস।
দয়া করে এ বিষয়ে পড়াশোনা করেন। টেলিমেডিসিন ও টেলিহেলথ এক নয়।
টেলিফোনে ও টেলিভিশনে টেলিহেলথ করা যাবে। অর্থাৎ জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য দেয়া যাবে, রোগ ও মহামারীর লক্ষণ নিয়ে আলাপ করা যাবে। সেলফ একজামিনেশন অব ব্রেস্ট শেখানো যাবে। কোলনস্কপির প্রয়োজনীয়তা বলা যাবে। সচেতন করা যাবে। হেলথ এডুকেশন দেয়া যাবে, সেমিনার, ওয়েবিনার মিটিং করা যাবে। এটাকে বলে টেলিহেলথ।
কিন্তু দুই বড়ি স্ক্যাবো খাবেন এটা বলা যাবে না। স্টেরয়েড খেয়ে পেটে আলসার বানাতে উৎসাহ দেওয়া যাবে না। মনে রাখেবেন আপনার দেয়া এসব ওষুধ খেয়ে একজনও যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার দায় আপনার। এর জন্য মামলা করা যায় বিদেশে।
রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া মানে টেলিমেডিসিন। এটা কিউরেটিভ। টেলিহেলথ হলো এডুকেশনাল ও প্রিভেন্টিভ।
টিভিতে বা টেলিফোনে বা সোশাল মিডিয়ায় টেলিহেলথ করা যাবে। টেলিমেডিসিন করতে গেলে কমপ্লায়েন্ট হতে হবে।
দেশে চিকিৎসকদের লোকে সস্তা ভাবার এটাও একটা কারণ যে অনেকেই মাঠে-ঘাটে , হাট-বাজারে বিনামূল্যে প্রেসক্রিপশন বিলি করেন।
দয়া করে তরুণ চিকিৎসকদের রেফারাল ছাড়া সিনিয়ররা রোগী দেখবেন না। আর হাটে-মাঠে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা প্রেসক্রিপশন ফ্রি বিলি করবেন না। টিভি ক্যামেরা দেখলেই ওষুধের বিপণন করবেন না।
এটা একটা পেশা এবং এর পেশাগত সম্মান ও নৈতিক অবস্থান বজায় রাখার পাশাপাশি নিজেদের ভুলে মানুষকে কৃমির ওষুধ আর স্টেরয়েড খাওয়াবেন না। গণ-প্রেসক্রিপশন দেবেন না।