ডায়াবেটিক রোগীর চিকিৎসায় সহায়তা করে গ্লুকোমিটার

কয়েকদিন আগে এডমিশন নাইট ডিউটিতে একজন রোগী আসলো অজ্ঞান অবস্থায়। রোগী পার্টি হিস্ট্রি দিল, সুস্থ মানুষ বাজার থেকে এসে অজ্ঞান হয়ে পড়েছে, নাকে মুখে দিয়ে ফ্যানা বের হয়ে গেছে। রোগী চার ঘন্টা ধরে অজ্ঞান।
বাজার থেকে এসে অজ্ঞান হয়ে পড়েছে। প্রথমে ভাবলাম কেউ পয়জনাস কিছু খাওয়াইয়া দিলো কিনা! পরে হিস্ট্রি নিয়ে জানলাম ডায়াবেটিক রোগী। তাড়াতাড়ি গ্লুকোমিটার দিয়ে গ্লুকোজ চেক করে দেখা গেল মাত্র ২.৮ mmol/L. 25% dextrose IV running স্টার্ট করলাম। আল্লাহর রহমতে দুই মিনিটের মধ্যে রোগী কথা বলতে শুরু করলো। রোগী পার্টি ভেবেছিলো রোগী হয়ত আর বাঁচবে না। পরে রোগীর স্ত্রী যখন এসেছেন তখন ওনার কাছ থেকে হিস্ট্রি নিয়ে জানতে পারলাম, রোগী নিয়মিত ইনসুলিন নেন। সেই রাতে ইনসুলিন নেয়ার পর তিনি আর রাতের খাবার খাননি ঠিকমত।
পরশু দিন নাইট ডিউটিতে। রাত চারটার দিকে এক রোগীর লোক দরজা নক করতে শুরু করলো। ওনারা সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন। রোগীর ঘোঙরানোর শব্দে ওনারা জেগে ওঠেছেন। রোগীর অনেকটা অজ্ঞান অবস্থায়, মুখ দিয়ে ফ্যাঁনা বের হচ্ছে। এই দেখে আমাকে ডাক দিলেন।
প্রথমে মনে হল স্ট্রোকের রোগী তাই খিঁচুনি হচ্ছে। সেই মুহূর্তে আগের সেই রোগীর কথা মনে পড়লো। তাড়াতাড়ি গ্লুকোমিটার দিয়ে গ্লুকোজ চেক করে দেখি Low। ঘুমের মধ্যে রোগীর হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়ে গেছে, উনারা কেউ টেরও পাননি! ইমেডিয়েট ম্যানেজমেন্ট দেয়ার ১ মিনিটের মাঝে আল্লাহর রহমতে রোগী কথা বলা শুরু করলো।
এর আগে রাত দুটোর দিকে হসপিটালের নিচে এসে দেখি ট্রলির উপর একটি নিথর দেহ শুয়ে আছে। রাত ১ টার দিকে হঠাৎ বুকে ব্যথা শুরু হয়। বুকে ব্যথা নিয়ে কাছাকাছি কোনো হসপিটালে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে রেফার্ড হয়ে আমাদের হসপিটালে আসেন। কিন্তু পেশেন্ট রিসিভ করার আগেই রোগী এক্সপায়ার করে।
অভিজ্ঞতা শেয়ার করার কারণ হল, যারা ডায়াবেটিক রোগী অবশ্যই বাসায় গ্লুকোমিটার রাখবেন। আর হার্টের রোগীরা অবশ্যই বাসায় নাইট্রোগ্লিসারিন স্প্রেটা রাখবেন। ডায়াবেটিক/হার্টের রোগী ছাড়া অন্যরাও রাখতে পারেন সাবধানতার জন্য। রাত বিরাতে এই কম দামী দুটো বস্তু হয়ত আপনার মূল্যবান জীবন বাঁচিয়ে দেয়ার উসিলা হিসেবে কাজে আসতে পারে!
যেদিন মৃত্যু লিখা আছে, সেদিন আসবেই। এটা কেউ ঠেকাতে পারবে না। কিন্তু জীবন বাঁচানোর শেষ চেষ্টাটুকু তো সবাই করতে চায়। সুতারং সেটা যেনো উপযুক্ত সময়েই সম্ভব হয়।
বিশেষ সাক্ষাৎকার
ইন্টার্নদের ভাতা ৩০ হাজার টাকা হওয়া উচিত: মুগদা মেডিকেল অধ্যক্ষ
আসছে নতুন কাব্যগ্রন্থ
সাহিত্য চর্চায় আনন্দ খুঁজে পাই: অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন

পিতাকে নিয়ে ছেলে সাদি আব্দুল্লাহ’র আবেগঘন লেখা
তুমি সবার প্রফেসর আবদুল্লাহ স্যার, আমার চির লোভহীন, চির সাধারণ বাবা
