আমার রোগী বেশিরভাগ মহিলা। তাদের ৪০% ব্রেস্ট এর,৪০% পায়খানার রাস্তার সমস্যা।আর ২০% অন্যান্য।ব্রেস্ট নিয়ে কিছু বলেছি। এ পর্বে থাকছে পায়খানার রাস্তায় মেয়েদের যত সমস্যা।
যদিও পায়খানার রাস্তার সমস্যা দেখার জন্যে আলাদা জায়গা আছে, সেখানে পরিক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসা দেয়া হয়। তারপর ও প্রাথমিক যেসব চিকিৎসা দেয়া যায় সেইগুলো আমি দিয়ে থাকি।
যেহেতু সার্জারিতে চার বছরের ট্রেনিং আছে এ সম্পর্কে আমার প্রচুর অভিজ্ঞতা।বিশেষ করে আমি যে স্যারের ট্রেনি ছিলাম, উনি ব্রেস্ট আর পাইলস ফিস্টুলা মেয়েদের ছেড়ে দিতেন।'তোদের তো এইগুলা করেই খেতে হবে' এই বলে। তাই প্রচুর ব্রেস্ট আর এনাল কেস অপারেশন করার সুযোগ হয়েছে।
আর তাদের অনেক দুখের কথাও জেনেছি। এই জন্যে আমি শ্রদ্ধেয় স্যারের কাছে কৃতজ্ঞ।
তাই এ ব্যাপারে কিছু কথা বলতে চাই। মেয়েদের মুল যে সমস্যা, তাহলো কন্সটিপেসান বা কোষ্ঠকাঠিন্য। আর বেশি লজ্জার কারনে প্রাথমিক অবস্থায় তারা ডাক্তারের কাছে যেতে চায় না। ফলে রোগ গভীর করে নিয়ে আসে।হাসপাতালে এসেও খোঁজে মহিলা ডাক্তার আছে কিনা? না হলে কবিরাজি।এই কবিরাজি যে কি ভয়ংকর তা আমি অনেক দেখেছি।
আমার মনে আছে, একবার এক মহিলার অপারেশান করার সময় তার পায়খানার রাস্তার মাংস খুলে খুলে আসতেছিলো।পুরো পায়খানার রাস্তায় দগদগে ঘা। পায়খানার রাস্তায় যন্ত্র কেন একটা আঙুল দিতে পারতেছিলাম না। অনেক কস্টে তার পায়খানার রাস্তা বড় করে নতুন করে তৈরি করে দিয়ে আসতে হইছে।
পায়খানার রাস্তার সমস্যার উপসর্গ :
শক্ত পায়খানা,ফলে রক্তপরা,ব্যাথা,চুলকানো,বাড়তি চামড়া ঝুলে থাকা,কিছু বের হয়ে আসা ইত্যাদি। এছাড়া পায়খানার রাস্তার আসে পাশে ফোড়া হয়ে ফেটে যায়,অপরিচ্ছনতার কারনে।তারপর তারা কোন ডাক্তারে শরণাপন্ন হয় না, যার ফলে এই ফোড়া অনেক ভিতরে চলে যায়।একে বলে ফিস্টুলা। কখনও কখনও অনেক বড় অপারেশন লাগে এই জন্যে।
এছাড়া হিমোরয়েড বা পাইলস একটি কমন সমস্যা। এতেও যদি প্রাথমিক অবস্থায় কেউ আসে। ডায়েট, ড্রাগ দিয়ে সারানো সম্ভব।
সবচেয়ে কমন যে সমস্যা,তাহলো ফিসার বা পায়খানার রাস্তা ফেটে যাওয়া, এইটা খুব যন্ত্রনাদায়ক। সাধারণত বাচ্চা হবার পর অনেক মেয়ের এই সমস্যা হয়।প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা করলে ভাল হয়ে যায়। না হলে ঘা হতে হতে একসময় পায়খানার রাস্তা ছোট হয়ে যায়।
তখন অপারেশন ছাড়া এর চিকিৎসা করা সম্ভব হয় না। আমি বেশিরভাগ রোগীর পায়খানার রাস্তা ছোট করে নিয়ে আসা দেখেছি।কারণ ইনডোরে কাজ করলে এইসব বেশি দেখা যায়।
এছাড়া পায়খানার রাস্তা বের হয়ে যাওয়া বা প্রোলাপ্স,ক্যান্সার,পলিপ পায়খানার রাস্তা প্রস্রাবের রাস্তার সঙ্গে লেগে যাওয়া(দাই দিয়ে বাচ্চা হবার ক্ষেত্রে টানা হেচড়ায়)। অনেকে সিজারের বিপক্ষে অনেক কথা বললেও আমি বলবো আমি এ ক্ষেত্রে সিজারের পক্ষেই অবস্থান নিতে চাই।
পায়খানার রাস্তার সমস্যা মেয়েদের বেশি হয় কারন, তাদের লজ্জার জন্যে রোগের বারোটা বাজায় তারপর ডাক্তাদের কাছে যায়।সবচেয়ে বড় কথা সচেতনতা। ডাক্তারদের ক্ষেত্রে কেনো ছেলে মেয়ে বিচার করতে হবে? এইটা,শরীরের একটা অংশ। এতে লজ্জার কিছু নাই।
তবুও যদি লজ্জাই পান তাহলে বলবো দেশে এখন মোটামুটি সব জেলায় মহিলা সার্জন আছে।খোঁজ নিয়ে তাকে দেখান। তবুও রোগ নিয়ে বসে থাকবেন না বা কবিরাজি করবেন না।
আরও আশার কথা দেশে খুব কম হলেও কলোরেক্টাল মহিলা সার্জন আছেন।অদূর ভবিষতে আরও অনেকেই আসবেন ইনসাআল্লাহ।
এক্ষেত্রে করণীয় কী
বেশি করে পানি খাবেন,শাক সবজি খাবেন। পায়খানা নরম রাখবেন আর পায়খানার রাস্তার কোন সমস্যা হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। আপনাদের সুস্থতাই আমার কাম্য।
ছেলেদের দুইটি অণ্ডকোষ বা টেস্টিস থাকে। অরকাইটিস হলো একটি বা দুটি অণ্ডকোষের…
অক্সিপিটাল নার্ভে আঘাত বা প্রদাহ হলে অক্সিপিটাল নিউরালজিয়া হয়। মাইগ্রেন বা অন্য…
হঠাৎ করে বুকে ব্যথা শুরু হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। বয়স…
আমাদের শরীরে প্যানক্রিয়াস বা অগ্নাশয় নামে একটি অরগ্যান বা অঙ্গ আছে। সেখান…
শীতে বিভিন্ন অসুখ বেশি হয়। এর মধ্যে ভাইরাস জ্বর অন্যতম। আবহাওয়া পরিবর্তনের…
উচ্চ রক্তচাপ খুব পরিচিত রোগ। উচ্চ রক্তচাপ থেকে অনেক ক্ষতি হয়। বিভিন্ন…